- Home
- All links
- Books
- Syllabus of Jamaat
- Ebook of Syllabus
- Ebook of Allama Syed Abul Ala Maududi
- Ebbok of Maolana Matiur Rahman Nizami
- Ebbok of AKM Nazir Ahmed
- Ebook of Muhammad Kamaruzzaman
- Ebook of Allama Yusuf Al Qarawi
- Ebook of Sayyid Qutb Shaheed
- Ebook of Allama Delwar Hossain Sayedee
- Ebook of Professor Ghulam Azam
- Ebook of Abbas Ali Khan
- Ebook of Maulana Muhammad Abdur Rahim
- Ebook of Haron Yahya Turkish
- Book of Anti-Atheism
- Subjects
- Jamaat-e-Islami
- Islami Chhatrashibir
- Prominent's opinion
- Success of Jamaat
- About us
Thursday, February 21, 2019
Monday, February 18, 2019
ইসলামের দৃষ্টিতে বাল্যবিবাহ-১
-এডভোকেট আব্দুস সালাম প্রধান
ভূমিকা : কোন ছেলে বা মেয়ের ঠিক কত বছর বয়সে বিয়ে হওয়া উচিৎ সে বিষয়টি আধুনিক বিশ্বের মানব সমাজের একটি নতুন ভাবনা। ভারতীয় উপমহাদেশের সকল ধর্মের ছেলে মেয়েদের বয়স নির্ধারণ করে তৎকালীন বৃটিশ সরকার ১৯২৯ সালে “পযরষফ সধৎৎরধমব ধপঃ”(১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন) প্রবর্তন করে। ১৯৪৭ সালের ১৪ এবং ১৫ ই আগস্ট ভারতীয় উপমহাদেশকে পাকিস্তান ও ভারতীয় ডমিনিয়ন নামে বিভক্ত করে স্বাধীনতা দেয়া হয়। পাকিস্তানের অংশ তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান বর্তমানের বাংলাদেশে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আইনটি বলবৎ ছিল। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল পূর্ব পাকিস্তান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। একই সালের ১৬ই ডিসেম্বর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের একপর্যায়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পরিপূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের দরবারে স্থান করে নেয়। ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান জাতীয় পরিষদে পাশ হয়। ঐ সংবিধানে ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ আইনটিকে পূণরায় কার্যকরিতা দেয়া হয়। আইনটি কার্যকর থাকার পরেও বাংলাদেশের অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের বিবাহের ক্ষেত্রে আইনটি মানা হচ্ছে কি না তার কোন কড়াকড়ি ছিল না। ২০১৭ সালের ২৪ শে নভেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনটিকে বিলুপ্ত করে “বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭” অনুমোদিত হয়। আইনটি তৎপূর্বে ২০১৭ সালের ৬ নং আইন হিসাবে ১১-০৩-২০১৭ ইং তারিখে জনসাধারনের জ্ঞাতার্থে গেজেট আকারে আইনটির খসড়া প্রকাশ করা হয়। নতুন আইনটির বৈশিষ্ট হলো পূর্বে বলবৎ থাকা ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে ছেলেদের বিবাহের বয়স ছিল ২২ বছর এবং মেয়েদের বয়স ছিল ১৮ বছর।
বর্তমান আইনে মেয়েদের বিবাহের বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং ছেলেদের বিবাহের বয়স সর্বনিম্ন ২২ এর স্থলে ২১ বছর নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বর্তমান বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে আরেকটি বৈশিষ্ট হলো আইনটির ১৯ ধারায় বলা হয়েছে যে “এই আইনে অন্যান্য বিধানে যা কিছুই বলা থাকুক না কেন বিধি দ্বারা নির্ধারিত বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতামাতা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীনে অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবেনা।
নতুন “বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭” বাংলাদেশে বলবৎ হওয়ার ফলে ইসলামী আইনে বাল্যবিবাহ আইনের সাথে বর্তমান আইনের অসংগতি দূরীভূত হয়েছে। ১৯৪৭ সালে ইসলামের নামে পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করলেও ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনসহ বৃটিশ সরকারের প্রবর্তিত কোন আইনকেই ইসলামী আইনের সাথে সামঞ্জস্য করে সংশোধন করা হয়নি। যা গোটা পাকিস্তানের ইসলামপ্রিয় মানুষের প্রত্যাশা ছিল। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার ও জাতীয় সংসদ নতুন বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাশ করায় এবং আইনটি ইসলামী আইনের সাথে সামঞ্জস্য হওয়ায় বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আনন্দিত। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রত্যাশা বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর মত দেশে প্রচলিত আইন গুলিকেও ইসলামী আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সংশোধন করা হবে।
বাল্যবিবাহ বলতে কি বুঝায় :
বাল্য বিবাহ সাধারণতঃ দুই প্রকার। এক.সাবালকত্ব প্রাপ্ত হয় নাই এমন একটি কন্যা শিশুকে অভিভাবক কর্তৃক বিশ, ত্রিশ, চল্লিশ, পঞ্চাশ বা তদুর্ধ্ব বয়সের কারো সাথে বিবাহ দেয়া। দুই. ছেলে বা মেয়ে উভয়ের মধ্যে বিবাহের বয়সে পৌছার আগে বা সাবালকত্ব লাভের পূর্বে উভয় পক্ষের অভিভাবক কর্তৃক বিবাহ দেয়া।
ইসলামী আইনে বাল্য বিবাহ : ইসলামী আইন বিশেষেজ্ঞ (ফকিহ)গণ নাবালক নাবালিকা ছেলেমেয়েদের উল্লেখিত দু ধরনের পদ্ধতিতে বিবাহ দেয়ার বিষয়ে দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে ফতোয়া প্রদান করেছেন। একদল সাধারণভাবে বাল্যবিবাহ নিষেধ করেছেন। যেমন ইমাম আবু হনিফা (র.) এর সমসাময়িক ইরাকী ফকিহ (ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ) ইমাম ইবনে শুবরুমা এবং কাজি আকুবকর আল আছাম। যে সমস্ত ফকিহ বাল্যবিবাহ সম্পাদন নিষিদ্ধ করার পক্ষে তাদের শরয়ী দলিল হলো কুরআন মজিদের সুরা আন নিসার ৬ নং আয়াতের প্রথম অংশ। “ওবতালুল ইয়াতামা হাত্তা ইযা বালাগুন্নিকাহা” অর্থাৎ তোমরা এতিমদের কে পরীক্ষা করতে থাক যতদিন না তারা বিবাহযোগ্য বয়সে পৌঁছে যায়। আয়াতংশটি আইনগত অভিভাবক পিতা, পিতার অভাবে দাদা বা বিকল্প অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে থাকা সম্পদ এতিমদের দায়িত্বে কখন প্রত্যার্পণ করা যাবে সে বিষয়ে নাজিল হয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহর নির্দেশ হলো এতিমরা বিবাহের বয়সে না পৌছা পর্যন্ত তাদেরকে সম্পত্তির দেখা শোনার দায়িত্ব অর্পণ করা যাবে না। উদ্ধৃত আয়াতাংশটিতে ছেলে মেয়েদের বিবাহের জন্য একটি বয়স নির্ধারিত আছে মর্মে বুঝা যায়। আর সেটা হলো বুলুগ বা সাবালকত্ব। ছেলেরা যখন এমন বয়সে উপনীত হয় যে সময়ে তাদের ইহ্তিলাম বা স্বপ্নদোষ হয়। এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে যখন তাদের মাসিক হায়িয বা মাসিক ঋতু আরম্ভ হয়। ইসলামী শরিয়তে সেটাই হলো ছেলেমেয়েদের বিবাহের বয়স। এই ধারার ফকিহগণের আর একটি যুক্তি হলো আরবী নিকাহ্ (বিবাহ) শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো যৌনমিলন শব্দটি নিয়ে। যেহেতু বিবাহের মূল উদ্দেশ্য হলো নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈধ যৌন মিলন। একজন নাবালক ও নাবালিকার মধ্যে বা একজন সাবালক বা সাবালিকার সাথে আরেকজন নাবালিকা বা নাবালকের মধ্যে বিবাহ সম্পাদন করা হলে বিবাহের মূল উদ্দেশ্য পূরণ হয় না। ফলে বিবাহটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। নাবালক ও নাবলিকার বিবাহ সম্পাদন করা গেলেও তারা সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তাদের উপর শরয়ী আইন প্রয়োগ করা যায় না। সে কারণে এ ধরনের বিয়ে অপ্রয়োজনীয় বা পরিত্যক্ত।
উল্লিখিত মতামতটির বিপরীতে ফকিহগণের অধিকাংশের ফতোয়া বা মতামত হলো নাবালক ও নাবালিকার মধ্যে বা কোন নাবালিকা মেয়ের সাথে যে কোন বয়সের সাবালক পুরুষের সাথে সম্পূর্ণরুপে জায়েজ বা বৈধ। এ মতটির সাথে যেসব ইসলামী আইনবিদ ঐক্যমত পোষণ করেছেন তারা হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.), ইমাম শাফেয়ী (র.), ইমাম মালিক বিন আনাস (র.), ইমাম আহমদ বিন হাম্বাল (র.) এবং তাদের অনুসারী পরবর্তী যুগের ইসলামী আইনবিদগণ। শীয়াহ্ বা জাফরী ফিকহের অনুসারীগণও এ মতের সাথে ঐক্যমত পোষন করেন। এই ধারার ফকিহ বা ইসলামী আইনবিদগণের অভিমত হলো ইসলামী শরিয়তের বিধান মোতাবেক নাবালক ছেলেমেয়েদের বিবাহ তাদের পক্ষে অভিভাবকগণ সম্পাদন করতে পারেন। ইসলামী শরীয়তে এধরনের বিবাহ সম্পূর্ণরুপে জায়েজ মর্মে তারা মত দিয়েছেন।
তাদের এ মতের স্বপক্ষে তারা পবিত্র কুরআনের সুরা আত তালাকের ৪ নং আয়াত এবং সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণের কতিপয় আসার (কর্মধারা বা আমল) দলিল হিসাবে উল্লেখ করেছেন। সুরা আত তালাকের ৪নং আয়াতে আল্লাহ বলেন“ওল্লায়ী ইয়াইস্না মিনাল মাহিদ্বি মিন নিসায়ীকুম ইনির তাবতুম ফাইদ্দাতুহুন্না ছালাছাতা আশহুরিন ওল্লায়ী লামইয়া হিদ্বনা” অর্থাৎ যেসব স্ত্রীলোকের মাসিক ঋতু বন্ধ হয়ে গেছে তাদের ব্যাপারে তোমাদের যদি সন্দেহ হয় (জেনে নাও) তাদের ইদ্দতকাল হলো তিন মাস(পরবর্তী বিবাহের জন্য বা স্বামীর সাথে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য)। আর যাদের মাসিক ঋতু আরম্ভ হয়নি তাদের জন্যও একই নির্দেশ। যেসব আসার (কর্মধারা) এ মতের স্বপক্ষে পেশ করা হয়েছে তা হলো এক.কুদামা ইবনে মাজউন (রা.) যুবাইর (রা.) এর সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যাকে বিবাহ করেন। তিনি অত্যন্ত বয়োবৃদ্ধ ছিলেন। বিবাহের পর কুদামা ইবনে মাজউন (রা.) ঘোষনা দেন যে তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন তাহলে যুবাইর (রা.) এর উক্ত কন্যা তাহার ত্যক্ত সম্পত্তির ওয়ারিশ বা মালিক হবে। দুই.হযরত ওমর (রা.) তার এক নাবালিকা কন্যার সাথেসাবালক ওরওয়া ইবনে যুবাইর (র.) এর বিবাহ দেন। তিন. ওরওয়া ইবনে যুবাইর (র.) তার এক ভাইয়ের তরফের নাবালক পুত্রের সাথে অপর এক ভাইয়ের নাবালিকা কন্যার বিবাহ দেন। চার.এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ ইবনে হাসান (র.) এর সাথে তার নাবালিকা কন্যার বিবাহের প্রস্তাব দেয়। তিনি ঐ প্রস্তাব জায়েজ হিসাবে গ্রহনপূর্বক উক্ত নাবালিকাকে গ্রহন করেন। পাঁচ.আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর সাথে একজন মহিলা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং ঐ মহিলার প্রথম স্বামীর তরফের নাবালিকা কন্যার সাথে সাবালক মুসাইব ইবনে নাখবার সাথে বিবাহ দেন। আব্দুলল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বিবাহটিকে জায়েজ বা বৈধ ঘোষনা করেন। উল্লেখিত দুটি ধারার ফকিহগণের মতামত পর্য়ালোচনার পর দ্বিতীয় ধারার ফকিহগণের মতামত শরয়ী দিক থেকে অধিকতর শক্তিশালী।
রসুলুল্লাহ (দ.) মুসলীম উম্মাহকে তাদের ছেলেমেয়েদের যৌবনকালে বিবাহ দেয়ার বা করার বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রসুলুল্লাহ (দ.) এর সাথে একটি যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে রসুলুল্লাহ (দ.) জাবেরকে জিজ্ঞেস করলেন যে তুমি কি বিবাহ করেছ? জাবের (রা.) বলেন যে আমি বললাম হ্যা। রসুলুল্লাহ (দ.) জিজ্ঞেস করলেন তোমার স্ত্রী কি কুমারী না পূর্ব বিবাহিতা? জাবের (রা.) উত্তর দিলেন পূর্ব বিবাহিতা। রসুলুল্লাহ (দ.) বললেন তুমি কেন একজন কুমারী যুবতী মেয়েকে বিয়ে করলে না। যার সাথে তুমি আনন্দ উপভোগ করতে এবং সেও তোমার সাথে আনন্দ উপভোগ করত। (সুনানে আবু দাউদ,হাদিস নং ২০৪৪)। কুমারী যুবতীদের সাথে যুবকদের বিয়ে হোক নবী করিম (দ.) সেটাই পছন্দ করতেন।
জাবের (রা.) এর পিতা হযরত আব্দুলল্লাহ (রা.) উহুদের যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন। ঐ সময়ে জাবের (রা.) অবিবাহিত যুবক ছিলেন। তার ৭ জন অবিবাহিতা ভগ্নি ছিল। তাদের দেখাশোনার জন্য জাবের (রা.) একজন বয়স্কা পূর্ববিবাহিতা মহিলাকে বিবাহ করেছিলেন। এ বিষয়ে রসুলুলল্লাহ (দ.) আরো বলেন পূর্বে বিবাহ হয়নি এমন মেয়ে বিয়ে করাই তোমাদের জন্য উচিত হবে কেননা তারা মিষ্টি মুখের অধিকারী ও নির্মল জরায়ুধারী এবং অল্পে তুষ্ট চিত্তের হয়ে থাকে। (সুনানে ইবনে মাযাহ,হাদিছ নং ১৮৬১)। আরেকটি হাদিসে দেখা যায় রসুলুলল্লাহ (দ.) তার উম্মতের যুবকদেরকে পূর্বে বিবাহ হয়নি এমন সুন্দরী ধর্মপরায়ণা যুবতী স্ত্রী গ্রহণে উৎসাহ দিতেন। (যাদুল মায়াদ, ৩য় খন্ড)।
ইসলামে বিবাহের গুরুত্ব :
ইসলামে সাধারণভাবে নাবালক ও নাবালিকাদের বিবাহ দেয়া বা করানো বৈধ বা জায়েয। কিন্তু এ ধরনের বাল্যবিবাহ সম্পাদন ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত কোনটিই নয়। সাবালক পুরুষদের বিবাহ করা কোন কোন ক্ষেত্রে ফরজ। আবার কোন ক্ষেত্রে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। সুরা আন্ নিসার ৩ নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন“ফানকিহু মা ত্ববা লাকুম মিনান নিসায়ী” অর্থাৎ তোমরা বিবাহ কর মেয়েদের মধ্য থেকে যাকে তোমার ভাল লাগে। বিবাহ করার প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করতে গিয়ে নবী করীম (দ.) বলেন যে, হে যুবকদল তোমাদের মধ্যে যে বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। আর যে বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে না সে যেন রোজা রাখে। রোজা যৌন মিলনের ইচ্ছাকে দমন করে। সহীহ বুখারী,হাদিস নং ৫২৯২। সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪০০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৪৬৯২। রসুলুল্লাহ (দ.) পুরুষদের যৌন মিলনের ইচ্ছাকে দমন করার জন্য খাশি (াধংবপঃড়সু) হতে নিষেধ করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (দ.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন আমরা রসুলুল্লাহ (দ.) এর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতাম। আমাদের সাথে স্ত্রীরা থাকত না।
তাই আমরা রসুলুল্লাহ (দ.)কে বলতাম আমরা কি খাশি হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে খাশি হতে নিষেধ করলেন। (সহীহ বুখারী,হাদিস নং ৫০৭১) হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন তিনজন সাহাবীর একটি দল রসুলুল্লাহ (দ.) এর স্ত্রীদের নিকট আসলেন (এবং নবী করীম (দ.) এর স্ত্রীর নিকট তাঁর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন)। জিজ্ঞাসার জবাবে নবী করীম (দ.) এর ইবাদত সম্পর্কে তাদেরকে জানানো হলে তারা (নবী দঃ) এর ইবাদতকে কম মনে করলেন এবং মন্তব্য করলেন যে আমাদের সাথে রসুলুল্লাহ (দ.) এর তুলনা হয় না। কারন তাঁর আগের এবং পরের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়েছে। তাদের একজন বলল আমি আমার বাকী জীবন সমস্ত রাত জুড়ে এবাদত করব। আর একজন বলল আমি সব সময় রোজা রাখব। আর একজন বলল আমি নারী সঙ্গ ত্যাগ করব (এধরনের কথোপ কথন চলা অবস্থায় রসুলুল্লাহ (দ.) তাদের মাঝে আসলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন তোমরাই কি তারা যারা এসব কথা বলেছ ?)। (তারা হ্যা বললে) রসুলুল্লাহ (দ.) বললেন আল্লাহর শপথ আমি তোমাদের থেকে অনেক বেশী আলল্লাহকে ভয় করি এবং তোমাদের থেকে আল্লাহর প্রতি বেশী অনুগত।
আমি রোজা রাখি (নফল) আবার তা থেকে বিরতও থাকি। নামাজ (নফল) আদায় করি। আবার ঘুমিয়ে পড়ি এবং আমি মেয়েদেরকে বিবাহ করি। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ ভাব পোষণ করবে সে আমার উম্মাত (দলভুক্ত) নয়। সহীহ বুখারী হাদিস নং ৫০৬৩, সহীহ মুসলিম হাদিস নং ১৪০১। এই হাদীসে রসুলুল্লাহ (দ.) বিবাহ করাকে অবশ্য পালনীয় সুন্নাত হিসাবে ঘোষনা করেছেন এবং সামর্থ্য থাকা স্বত্বেও সুন্নাতটি পালন না করলে উম্মতে মুহাম্মদী হিসাবে গণ্য হবে না মর্মেও ঘোষণা করেছেন। বিবাহ করার বিষয়ে সমস্ত তাগিদ প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান নর নারীদের প্রতি দেয়া হয়েছে। বাল্যবিবাহ ফরজ বা সুন্নাত এই মর্মে কোন ঘোষনা কুরআন মজীদ কিংবা হাদীসে রসুলে বর্ণিত হয়নি। কোন সমাজ বা রাষ্ট্রের মুসলমানরা যদি সম্পূর্ণরুপে বাল্যবিবাহ সম্পাদন থেকে বিরত থাকে তাতে গোনাহ হবে বা ইসলামী শরীয়া লংঘন হবে এমন কোন কথাও কোরআন হাদীসে বর্ণিত হয় নাই।
ইসলামী আইনে বিবাহ কোন পবিত্র বন্ধন বা sacrament নয় বরং ইসলামী আইনে বিবাহ এক ধরনের সোস্যাল কন্ট্রাক্ট বা সামাজিক, পারিবারিক চুক্তি মাত্র। এ বিবাহ চুক্তির অধীনে কোন সমাজের দুজন নারী এবং পুরুষ একত্রে বসবাস এবং সন্তান গ্রহন ও পরষ্পরের উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য শরীয়তের বিধান মোতাবেক এ ধরনের চুক্তিতে আবদ্ধ হন। যা যে কোন সময় খন্ডনযোগ্য। (চলবে)
Source: http://www.dailysangram.com
Tuesday, February 12, 2019
পশ্চিমা সাহিত্যে ধর্ম ও রসূল (স.) প্রসঙ্গ
আহমদ মনসুর :
পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় রসূলুল্লাহ (স.)-এর জীবনী রচিত হয়েছে, তাঁর জীবনের বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে। আমরা যখন আধুনিক বিজ্ঞান-দর্শন ও বিভিন্ন টেকনিক্যাল জ্ঞানের জন্য পশ্চিমা জ্ঞান - বিজ্ঞান মন্দিরে ধর্ণা দেই তখন আমাদের খেয়াল থাকে না যে, পশ্চিমা জগৎ আধ্যাত্মিক প্রশান্তি লাভের জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল। আমরা যখন সাহিত্যে নীতিবোধ বা ধর্মের উপস্থিতিকে সাহিত্য গুণের পরিপন্থী মনে করি তখন পশ্চিমা জগতের অনেক শীর্ষ স্থানীয় সাহিত্য- শিল্পী ধর্মকে সাহিত্যের কেন্দ্র শক্তি হিসেবে গ্রহণ করে তাদের সাহিত্য সম্ভার বিশ^কে উপহার দিয়ে থাকেন। তারা শুধু ধর্মের জয়গান গেয়েই থেমে থাকেন না বরং ইসলামের নবী প্রসঙ্গ নিয়ে সাহিত্য রচনা করে তৃপ্তি লাভ করে ধন্য হন।
পশ্চিমা জগতের অনেকেই ধর্মাশ্রয়ী লেখক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন। যেমন, সাহিত্যিক ঔপন্যাসিক জুলিয়াস গ্রিণ। ১৯০০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্যারিসে তাঁর জন্ম হয়। তাঁর পিতা মাতা ছিলেন আমেরিকান, কিন্তু গ্রিন জীবনের বেশির ভাগ সময় ফ্রান্সে কাটিয়েছেন এবং প্যারিসকেই তিনি নিজের শহর বলে মনে করেছেন।
জুলিয়াস গ্রিন শতাব্দীর তিন -চতুর্থাংশ সময় জুড়ে এমন এক বিশাল সাহিত্য জগত নির্মাণ করেছেন যার ব্যাপ্তি তলস্টয়-এর শিল্পকর্ম থেকে বিস্তৃত। টি, এস. ইলিয়ট, আন্দ্রেজিঁদ, ম্যালকম লাউরী, জর্জ অরওয়েল এবং রাইনের মারিয়া লিরকের মত বিশ্ব বিশ্রুত কবি সাহিত্যিকগণ গ্রিনের অনুরক্ত পাঠক।
পারলৌকিক বিশ্বাস ছিল গ্রিনের জীবনের প্রধান অবলম্বন। আন্দ্রেজিঁদ ধর্মীয় গোড়ামীর অভিযোগ এনে গ্রিনকে প্রায়ই সমালোচনা করতেন। জিঁদের ধর্ম চেতনার সমালোচনা করে ম্যুরিয়াক লিখেছিলেন, তিনি শয়তানের পথ বেছে নিয়েছেন। এ মন্তব্যে গ্রিন মর্মাহত হয়ে তার জার্নালে লিখেছিলেন’। ‘অদৃষ্টের ব্যাপারে ম্যুরিয়াক কি জানেন? শেষ বিচারের মালিক তো একমাত্র আল্লাহ।’
গ্রিনের চিন্তার মধ্যে ধর্মের প্রগাঢ়তা কত গভীর ছিল তা তাঁর কয়েকটি বাণী থেকে উপলদ্ধি করা সম্ভব। যেমন তিনি বলেন, Faith means walkink in water- বিশ্বাসের অর্থ হচ্ছে পানির উপর দিয়ে হেটে চলা। তিনি আল্লাহর রহমতের উপর বেশি আশা করে লিখেছেন, Even I go down as far as Hell, God’s arm is long enough to pull me up again - এমনকি আমি যদি জাহান্নামে নেমে যাই, স্রাষ্টার হাত এত দীর্ঘ যে, তিনি আমাকে আবার টেনে তুলবেন।
আল্লাহর পথে মৃত্যুকেই ধর্মের সার বিবেচনা করে গ্রিন লিখেছন : To be ready to die, for some one, you have never seen, whose Voice you have never heard that is the whole of Christianity-
তুমি যাকে কখনো দেখনি, যার কথা কখনো শোননি তাঁর জন্য মরতে প্রস্তুত থাকাই হচ্ছে ধর্মের সার কথা। গ্রিনের এ কথার মধ্য দিয়ে ধর্মের প্রতি তাঁর গভীর আন্তরিকতা প্রকাশ পেয়েছে।
গ্রিন যখন Christianity- এর জন্য মরণ বরণ করতে প্রস্তুত তখনই দেখতে পাই নোবেল বিজয়ী হোসে সারামাগোকে ধর্মের মূল কথাকে বিস্তৃতভাবে প্রকাশ করতে। পর্তুগালের দক্ষিণ অঞ্চলে ১৯২২ সনের ১৬ নভেম্বর এই ঔপন্যাসিক জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সালে সারামাগো নোবেল সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং বিতর্কিত উপন্যাস হচ্ছেThe Gospel according to Jesus Christ (1991)। এই উপন্যাসে তিনি দেখিয়েছেন যে, অতি সাধারণ মানুষের ন্যায় আল্লাহ যীশু খৃষ্টকে বলেছেন যে, পৃথিবীতে তুমি একটি নতুন ধর্ম স্থাপন করবে কিংবা ঐ একই কথা, তোমার নামে তা স্থাপিত হবে। এবং হানাহানি অসহিষ্ণুতা হিংসা অর্থাৎ সব ধরনের অশ্রুরক্ত আত্মহুতির শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়াবে ঐ ধর্ম। এ উপন্যাসের মূল চরিত্র পৃথিবীর সব দুঃখ দুর্দশা, অবিচার অনাচারের জন্য দোষী করা হয় স্রাষ্টাকে। ফলে পর্তুগালের রাজনীতিকরা এই বইয়ের প্রকাশনা ও বিক্রি বন্ধ করে দেন এবং European literary award for fiction এ এই বইয়ের নাম পাঠান থেকে বিরত থাকেন।
শুধু হোসে সারা মোগেই নন, এমন আরও দুই একজন বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ধর্মের ব্যাপারে মানুষের ভক্তি ও বিশ্বাসকে নড়বড়ে করে তুলতে ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছেন। ২০০১ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ভি. এস. নাইপল এ বিষয়ে কম পিছিয়ে নেই। তাঁর বিখ্যাত বই ‘বিয়ন্ড বিলিফ’ বইটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ‘ইসলামের কাছে নিজকে সঁপে দেয়ার মানে চরম নির্বুদ্ধিতা ’। তিনি নিজের শেকড়ের প্রতি অনুরক্ত থেকে লেগেছেন ইসলামের পেছনে। তিনি আবিস্কার করেছেন তৃতীয় বিশে^র অপরাপর সমস্যার চেয়ে বড় আপদ হচ্ছে ইসলাম। নাইপল উক্ত বইয়ে লেখেন, “পশ্চিম হচ্ছে জ্ঞান- বিজ্ঞান সমালোচনা, কারিগরী বিদ্যা, আর যাবতীয় হিতকর কেজো প্রতিষ্ঠানের আধার। আর ইসলাম হচ্ছে এর উপর ভয়ানকভাবে ক্ষিপ্ত আর নির্ভরশীল এক প্রতিবন্ধী, যে কিনা ক্রমশ নতুন আর অপ্রতিরোধ্য এক শক্তির অস্তিত্ব আঁচ করতে পারছে। পশ্চিমা বিশ্ব ইসলামকে কতই না ভালো জিনিস উপহার দিয়েছে। আর যারা ইসলামর কাছে নিজেদেরকে সঁপে দিয়েছিল তারা তা ভিতরের তাগিদ থেকে করেনি”। ইসলামের প্রতি এ ধরনের মন্তব্য নাইপলের বুদ্ধিবৃত্তিক বিপর্যয় ব্যতিত কিছু নয়। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এডওয়ার্ড সাইদ নাইপলের ‘বিয়ন্ড বিলিফ’ এর সমালোচনা করে যে সংক্ষিপ্ত মন্তব্য করেন তা শান্তিকামী ধর্মীয় বিশ্বাসে গভীর চিত্তের মানুষদের হৃদয়ে চিন্তার ঝড় তোলে। এডওয়ার্ড সাইদ বলেন, “বড় খেদের কথা হচ্ছে, ইসলামকে নিয়ে লেখা নাইপলের সর্বশেষ বইটিকে বৃহৎ একটি ধর্ম সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা বলে বিশ^াস করা হবে। এর ফলে আরো বেশি সংখ্যক মুসলমান দুর্ভোগ আর অপমানের শিকার হবেন। আর পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে তাদের ফারাকটা আরও বাড়বে ও গভীর হবে।”
ধর্মবোধ ও ইসলামকে যখন কোন কোন সাহিত্যিক এভাবে মানুষের জন্য বিকৃত বিশ্লেষণের মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করতে চান তখন আমরা দেখি কিছু কিছু সাহিত্যসেবী এহেন বিভ্রম এড়িয়ে কর্পুরধর্মী মেধা বর্জিত রস সম্ভোগ পরিত্যাগ করে ধর্মের সশ্রদ্ধ অধ্যয়নে লিপ্ত হন। ধর্ম পাঠে যারা মেধা সমৃদ্ধ তারাই ধর্মীয় ভাবধারায় সাহিত্যের একটা নতুন যুগ গড়ে তোলার প্রয়াসে সন্ধানশীল। এ সব সন্ধানশীল সাহিত্যিকগণ রসুলের জীবনকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছেন সহিত্য সৌধের উঁচু মিনার।
আলোচনা করা যাক এজরা পাউন্ডের কথা। মার্কিন কবি এজরা পাউন্ড তাঁর বিরাট কাব্যগ্রন্থ, একটি মাত্র কবিতায় তিনি লিখেছেন আজীবন, সেটা হচ্ছে Cantoes মানে অংশ। সে দীর্ঘ কবিতাটি বর্তমান কালের একটি জীবন জিজ্ঞাসার প্রতিশ্রুতি।
Thrones ক্যানটোজের একটি অধ্যায়। যেখানে তিনি একটি জায়গায় রসূলে খোদার উল্লেখ করে ইউরোপের লোকদেরকে বলেছেন, তোমরা তো সব সময় হাতই পাতলে এবং হাত পেতে কেবল গ্রাস করতে চাচ্ছ, গ্রহণ করতে চাচ্ছ, কিন্তু পৃথিবীতে এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি অনবরত দানই করেছেন। তিনি মানুষের কাছে কোন কিছু চাননি। রসূলে খোদা সম্পর্কে এই অসাধারণ উক্তি - এ নিয়ে কেউ কখনো আলোচনা করে না। Thrones -এর মধ্য্যে এ উক্তিটি যে আছে তাও অনেকে জানে না। বলার এক মাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হবে।(১)
সুইডেনের মনীষী লেখক জি. ওয়াইডেন গ্রেন তাঁর সদ্য প্রকাশিত ‘পয়গম্বরের স্বর্গারোহন ও স্বর্গীয় গ্রন্থ নামক গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, কয়েকজন পয়গম্বর তাঁদের নির্ধারিত কর্তব্য পালনের পর হয় একটি ঐশীগ্রন্থ কিংবা একটি ব্যবস্থাপত্র অথবা হজরত মুসার মতো কতগুলো বিধান- লিপি লাভ করেছেন। অবশ্য মুসলিম জাহানে রসূলুল্লাহর ‘মেরাজ’ -এর যে ভূমিকা, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর হার্টম্যান তাঁর এক গ্রন্থে প্রমাণ করেছেন, রহস্যবাদী ও কবি, উভয় শ্রেণীর লেখকদের রচিত কতিপয় গ্রন্থের যে বিষয় বস্তু, তার আদর্শ হচ্ছে রসূলুল্লাহর এই ‘মেরাজ।’ প-িত বুসেট এই সমস্যাটি নিয়ে বিশেষভাবে আলোচন্ করেছেন।(২)
পৃথিবীতে এমন কোন মানব নাই যাঁহার সাথে সর্বোত্তম ব্যক্তিত্ব রসূলুল্লাহর তুলনা হইতে পারে।
...উইনউড্ বলিয়াছেন, “মুহম্মদ (স.) অধিক করেন নাই বলিয়া দুঃখ না করিয়া আমাদের উচিত তিনি যে এত করিয়াছেন তাহার জন্য অবাক হওয়া। ইতিহাসের উপর ব্যক্তি বিশেষের প্রভাবের উদাহরণ হিসাবে তাঁহার জীবন হইল যোগ্যতম উদাহরণ। এই একক ব্যক্তি তাঁহার জাতিকে গৌরাবান্বিত করিয়াছেন, অর্ধেক পৃথিবী জুড়ে তাঁহার ভাষা ব্যাপ্ত করিয়াছেন। বারো শত বৎসর পূর্বে ব্যঙ্গ বিদ্রুপের মুখে তিনি মানুষের কাছে যে বাণী প্রচার করিয়াছেন, আজ তাহাই লন্ডনে, প্যারিসে, বার্লিনে, মক্কায় -যেখানে তিনি কাজ করিয়াছেন, মদীনায়- যেখানে তিনি ইন্তেকাল করিয়াছেন, কনস্ট্যান্টিনোপলে, কায়রোতে, ফেজে টিমবুকটুতে, জেরুজালেমে, দামেস্কে, বসরায়, বাগদাদে, বোখারায়, কাবুলে, কলিকাতায়, পিকিং-এ, মধ্য-এশিয়ার উচ্চ ভূমিতে, ভারতীয় দ্বীপ পুঞ্জের দ্বীপসমূহে, মানচিত্রে স্থান পায়নি এমন সব স্থানে, তৃষ্ণার্ত মরুর মরুদ্যানে, অজানা নদীর তীরবর্তী গন্ডগ্রামে, পন্ডিত অথবা অনুগামিগণ গভীর মনোনিবেশ সহকারে অধ্যয়ন করেন।(৩)
“রোমান্টিক যুগের কবি (১৭৯৪- ১৮৩২ গ্যেটে। রোমান্টিক যুগের কাজ হল এমন কোনো নতুন সূত্র বা তত্ত্ব বা শক্তির কিংবা তাদের নূতন কোনো সম্বন্ধ বিন্যাসের আবিষ্কার যার দ্বারা আবার ঐ ভেঙ্গে ছত্রাকার হয়ে যাওয়া জীবনকে কোন একটি মূল দ্যোতনা ও প্রবেগের মধ্যে গেঁথে নেওয়া যায়।
গ্যেটে যা সমাধান দিলেন তাকে বলা যায় বুদ্ধি মুক্তি বিশোধন, বিশ্বব্যাপী প্রসারণ। “গ্যেটে এই প্রকাশিত জগতের বস্তু প্রাণ- মনকে তার চেতনার দ্বারা আয়ত্ব বা উদ্ভাসিত করতে চেয়েছিলেন। একটা অধ্যয়ন তত্ত্বের বুদ্ধিগত প্রতিফলন ছিল তাঁর চেতনায়, যা ফুটে উঠেছিল তাঁর ‘ম্যাহোমেটস গেসাঙ্গ’ শীর্ষক এক অপূর্ব কবিতায়। গ্যেটে এই কবিতায় রসুলুল্লাহর জীবনকে একটি নদীর সঙ্গে তুলনা করেছেন, যে নদী অন্য মস্ত উপনদী, প্রবাহ ইত্যাদির জলধারা বহন করে সমুদ্র বক্ষে নিয়ে যাচ্ছে।
রসূলুল্লাহর মহৎ ব্যক্তিত্বের কালজয়ী স্তুতিবাদ ধ্বণিত হয়েছে তার ‘ম্যাহোমেটস গেসাঙ্গ’ শীর্ষক কবিতায়। কবিতাটির শুরু ছিল নিম্নরূপ :
প্রস্তরগাত্র থেকে প্রবাহমান
নির্ঝরটির দিকে তাকিয়ে দেখ।
কী তার দীপ্তি,
আসমানের নক্ষত্রপূঞ্জকে হার মানায়।
মেঘমালারও ঊর্ধ্ব দেশে
যে সহৃদয় ফেরেশতারা বিচরণ করেন
তারাই লালন করেছেন,
গড়ে তুলেছেন
এই প্রাণবন্ত শিশুকে
পাহাড় চূড়াবলীর কঠোর অথচ দয়ার্দ পরিবেশে।”
‘গ্যেটের উপরে কোরআনের প্রভাব সম্বন্ধে বিস্তারিত বিবরণ আমাদের লভ্য। তিনি এ মহাগ্রন্থের দ্বিতীয় সূরাতে ইসলামের অন্তর্নিহিত বাণীর সন্ধান লাভ করেন। এই কিতাব, “এতে সন্দেহের কোন আবকাশ নেই.” এ ধরনের বর্ণনা তাঁকে একান্তভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেন: এভাবে সুরার পর সুরা বিবৃত হয়ে চলেছে। বিশ্বাস ও অবিশ্বাসকে পরিষ্কার ভাষায় পৃথক করে দেখান হয়েছে। বিশ্বাসীর স্থান উঁচুতে আর অবিশ্বাসীদের স্থান নীচুতে। বেহেশত্ অপেক্ষা করছে বিশ্বাসীর জন্যে, আর দোযখ অবিশ্বাসীর জন্যে। এই পবিত্র গ্রন্থের বিশাল বক্ষে রয়েছে বিধিসিদ্ধ এবং অবিধেয় বস্তু ও বিষয়াবলী সম্বন্ধে বিস্তৃত নির্দেশ, ইহুদী ও খ্রিষ্ট ধর্মীয় ঐতিহ্যাশ্রিত পৌরাণিক কাহিনী সমষ্টি, ব্যাখ্যা, পুনরুক্তি, অন্তহীন অতিভাষণ - এমন কত কি! কিন্তু আপনি একবার অভিনিবেশ সহকারে এ-গ্রন্থ অধ্যয়ন শুরু করলে আর ছাড়া পাবেন না। বারবার আপনি ত্যক্ত হয়ে এ বই তুলে রাখবেন, কিন্তু আবার নামিয়ে হাতে নিতে হবে। এমনি বিকর্ষণ ও আকর্ষণের মধ্য দিয়ে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনার অন্তর গভীর প্রশংসায় ভরে উঠছে এবং শেষতক্ ভক্তিতে নুয়ে পড়েছে। ... ইসলামী একেশ্বর বাদের প্রতি গ্যেটে গভীরভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন। তাঁর মতে “আল্লাহর এই নিরঙ্কুশ হাতিয়ার দিয়েই মুহাম্মদ (স.) বিশ্ব বিজয়ী হয়েছিলেন।”
গ্যেটের নিম্নোক্ত বাণী সুপ্রসিদ্ধ :
“ইসলামের অর্থ যদি হয় আল্লাহর বিধানের প্রতি আত্মসমর্পণ, তবে আমরা সকলেই ইসলামী নীতি অনুযায়ী বেঁচে থাকি এবং ইসলামী নীতি অনুযায়ীই মৃত্যুবরণ করি।”(৪)
গ্যেটের সমসাময়িক বিলাতের বিখ্যাত কবি উইলিয়ম ব্লেক ( ১৭৫৭- ১৮২৭)। কবি ধর্মের বিজয় বার্তা প্রচার করতে চেয়েছেন। কবি লিখলেন:
Bring me my bow of burning gold!
Bring me my arrows of desire!
Bring me my spear! oh clouds unfold!
Bring me my chariot of fire!
I will not erase from mental flight.
কবি তাঁর এ লেখার মধ্য দিয়ে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাবার দৃঢ় ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। যতদিন না ইংল্যাণ্ডের ভূমিতে পবিত্র জেরুজারেনমের অবস্থান তথা ধর্ম রাজ্য প্রতিষ্ঠিত না হবে ততদিন তার হাত থেকে তরবারি খসে পড়বে না আর হৃদয়ের বাসনা থাকবে জাগরুক।
উইলিয়ম ব্লেক একজন অতীয়ন্দ্রবাদী বিশ্বাসী কবি ছিলেন। কবি তার প্রভাব বিস্তার করেছেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আইরিশ জাতীয়তাবাদী কবি উইলিযম বাটলার ইয়েটস-এর উপর। ইয়েটস এ সত্য স্বীকার করে বলেছেন, ব্লেকের প্রফেটিক বই আমার মনোরাজ্যে বিপ্লব ঘটিয়েছে। ইয়েটস ছিলেন অলৌকিকতায় বিশ্বাসী বৈজ্ঞানিক জড়বাদ বিরোধী অপ্রাকৃত ও থিওসফিতে আকৃষ্ট কবি। ইয়েটস সন্ধান করেছেন চিরন্তনকে, যা তাঁর ‘সেইলিং টু বাইজেন্টাইন’ (Sailing to Byzantium) কবিতায় পরিস্ফুটিত হয়েছে।
কবি সত্তা ব্যক্তিত্ব নিরালম্ব বস্তু নয়, অর্থাৎ দেশ ও কাল গত পরিবেশ নিরপেক্ষ নয়। পশ্চিমা সাহিত্যিকদের সাহিত্য চর্চা তাদের পরিবেশ নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু অন্তরের সুর স্থান কালের সীমারেখা না মেনে সব দেশে সবকালে একই রকম বেজে উঠেছে। তাই সাহিত্যে ধর্মীয় চেতনার প্রতিফলন সব দেশে সব কালে কম বেশি ছিল, আজও আছে। কিন্তু সামাজিক বিবর্তন ও পরিবর্তনের ধারায় যারা সাহিত্য থেকে ধর্মীয় মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে শুধু রসের চর্চায় মেতে থাকতে চান তারা অন্তরের ডাক শোনেন না বা শোনলেও বুঝতে অক্ষম। আজ বাংলা সাহিত্যে যারা অন্তরের বেজে ওঠা সুরকে বধিরতার ভনিতায় শুনতে না রাজ তাদের উচিত পাশ্চাত্য সাহিত্যের আঙ্গিনায় হাজির হয়ে গ্যেটে, ব্লেক, ওয়ার্ডস ওয়ার্থ, ইয়েটস প্রমুখদের সাথে তাল মিলিয়ে সাহিত্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা।
তথ্যসূত্র :
(১) সাহিত্য ও বিশ্বাস-সৈয়দ আলী আহসান
(২) ড.এ্যানমেরী শিমেল-তারী
(৩) নতুন আলোকে ইকবালের চিন্তাধারা - লেঃ কর্ণেল কে . এ রশীদ
(৪) ইকবাল ও গ্যেটে-মুমতাজ হাসান।
Source: www.dailysangram.com
Thursday, January 24, 2019
ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করো । জাফর আহমাদ
ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করা আল-কুরআনের অনুসারীদের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আচ্ছা তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার ওপর যে কিতাব নাজিল হয়েছে, তাকে যে ব্যক্তি সত্য মনে করে আর যে ব্যক্তি এ সত্যটির ব্যাপারে অন্ধ, তারা দু’জন সমান হবে; এটা কেমন করে সম্ভব? উপদেশ তো শুধু বিবেকবান লোকেরাই গ্রহণ করে। আর তাদের কর্মপদ্ধতি এমন হয় যে, তারা আল্লাহকে প্রদত্ত নিজেদের অঙ্গীকার পালন করে এবং তাকে মজবুত করে বাঁধার পর ভেঙে ফেলে না। তাদের নীতি হয়, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক ও বন্ধন অক্ষুণ্ণ রাখার হুকুম দিয়েছেন সেগুলো তারা অক্ষুণ্ণ রাখে, নিজেদের রবকে ভয় করে এবং তাদের থেকে কড়া হিসাব না নেয়া হয় এই ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে। তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে, নামায কায়েম করে, আমার দেয়া রিজিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে। আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই।” (সূরা আর রাদ-১৯-২২)
আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেন, “হে নবী সৎ কাজ ও অসৎ কাজ সমান নয়। তুমি অসৎ কাজকে সেই নেকি দ্বারা নিবৃত্ত করো যা সবচেয়ে ভালো। তাহলে দেখবে যার সাথে তোমার শত্রুতা ছিল সে অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে গিয়েছে।” (সূরা হা-মিম আস সেজদা : ৩৪)
উল্লেখিত আয়াতে বিবেকবান মু’মিনের কর্মপদ্ধতি, নীতি ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছো :
আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেন, “হে নবী সৎ কাজ ও অসৎ কাজ সমান নয়। তুমি অসৎ কাজকে সেই নেকি দ্বারা নিবৃত্ত করো যা সবচেয়ে ভালো। তাহলে দেখবে যার সাথে তোমার শত্রুতা ছিল সে অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে গিয়েছে।” (সূরা হা-মিম আস সেজদা : ৩৪)
উল্লেখিত আয়াতে বিবেকবান মু’মিনের কর্মপদ্ধতি, নীতি ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছো :
কর্মপদ্ধতি
“তারা আল্লাহকে প্রদত্ত নিজেদের অঙ্গীকার পালন করে এবং তাকে মজবুত করে বাঁধার পর ভেঙে ফেলে না।” এটি হচ্ছে অনন্তকালীন অঙ্গীকার যা সৃষ্টির শুরুতেই আল্লাহ সমস্ত মানুষের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। তিনি অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, মানুষ একমাত্র তাঁর বন্দেগি করবে। সূরা আরাফের ১৭২ নম্বর তা আরো স্পষ্ট আকারে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “আর হে নবী! লোকদের স্মরণ করিয়ে দাও সেই সময়ের কথা যখন তোমাদের রব বনি আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাদের বংশধরদের বের করেছিলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের ওপর সাক্ষী বানিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন: আমি কি তোমাদের রব নই? তারা বলে ছিলো: নিশ্চয়ই তুমি আমাদের রব, আমরা এর সাক্ষ্য দিচ্ছি। এটা আমি এ জন্য করেছিলাম যাতে কিয়ামতের দিন তোমরা না বলে বসো, আমরা তো এ কথা তো জানতাম না।” প্রত্যেকটি মানুষের কাছ থেকে নেয়া এ অঙ্গীকার তার প্রকৃতির মধ্যে মিশে আছে। মায়ের গর্ভ থেকে মৃত্যু অবদি অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে মানুষের অস্তিত্ব লাভ এবং তাঁর প্রতিপালন কর্মকাণ্ডের আওতাধীনে সে প্রতিপালিত হতে থাকে তখই এটি পাকাপোক্ত হয়ে যায়। আল্লাহর রিজিকের সাহায্যে জীবন যাপন করা, তাঁর সৃষ্ট প্রত্যেকটি বস্তুকে কাজে লাগানো এবং তাঁর দেয়া শক্তিগুলো ব্যবহার করা- এ গুলো মানুষকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে একটি বন্দেগির অঙ্গীকারে বেঁধে ফেলে। কোন সচেতন, বিবেককান ও বিশ্বস্ত মানুষ এ অঙ্গীকার ভেঙে ফেলার সাহস করতে পারে না।
“তারা আল্লাহকে প্রদত্ত নিজেদের অঙ্গীকার পালন করে এবং তাকে মজবুত করে বাঁধার পর ভেঙে ফেলে না।” এটি হচ্ছে অনন্তকালীন অঙ্গীকার যা সৃষ্টির শুরুতেই আল্লাহ সমস্ত মানুষের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। তিনি অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, মানুষ একমাত্র তাঁর বন্দেগি করবে। সূরা আরাফের ১৭২ নম্বর তা আরো স্পষ্ট আকারে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “আর হে নবী! লোকদের স্মরণ করিয়ে দাও সেই সময়ের কথা যখন তোমাদের রব বনি আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাদের বংশধরদের বের করেছিলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের ওপর সাক্ষী বানিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন: আমি কি তোমাদের রব নই? তারা বলে ছিলো: নিশ্চয়ই তুমি আমাদের রব, আমরা এর সাক্ষ্য দিচ্ছি। এটা আমি এ জন্য করেছিলাম যাতে কিয়ামতের দিন তোমরা না বলে বসো, আমরা তো এ কথা তো জানতাম না।” প্রত্যেকটি মানুষের কাছ থেকে নেয়া এ অঙ্গীকার তার প্রকৃতির মধ্যে মিশে আছে। মায়ের গর্ভ থেকে মৃত্যু অবদি অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে মানুষের অস্তিত্ব লাভ এবং তাঁর প্রতিপালন কর্মকাণ্ডের আওতাধীনে সে প্রতিপালিত হতে থাকে তখই এটি পাকাপোক্ত হয়ে যায়। আল্লাহর রিজিকের সাহায্যে জীবন যাপন করা, তাঁর সৃষ্ট প্রত্যেকটি বস্তুকে কাজে লাগানো এবং তাঁর দেয়া শক্তিগুলো ব্যবহার করা- এ গুলো মানুষকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে একটি বন্দেগির অঙ্গীকারে বেঁধে ফেলে। কোন সচেতন, বিবেককান ও বিশ্বস্ত মানুষ এ অঙ্গীকার ভেঙে ফেলার সাহস করতে পারে না।
নীতি
“তাদের নীতি হয়, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক ও বন্ধন অক্ষুণœ রাখার হুকুম দিয়েছেন সেগুলো তারা অক্ষুণœ রাখে, নিজেদের রবকে ভয় করে এবং তাদের থেকে কড়া হিসাব না নেয়া হয় এই ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে।” এমন সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক যেগুলো প্রতিষ্ঠিত হলেই মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ ও সাফল্য নিশ্চিত হয়। বিশ্ব মুসলিমদের মাঝে অশান্তির প্রধান কারণ হলো, তারা আজ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শতধা বিভক্ত হয়ে গেছে। হোক তাদের ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক বা হোক তা ধর্মীয়। আল্লাহর ভয় ও আখিরাতের কড়ায় গণ্ডায় হিসাব দিতে হবে সে ভয়ও তাদেরকে বিচলিত করে না। অথচ স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সা: এ হিসাবের ভয়েও বিচলিত হতেন। তিনি হযরত আয়েশা রা:কে নামাজে এ দো’আ করতে শিখিয়েছেন “আল্লাহুম্মা হাসিবনি হিসাবাই ইয়াসিরা” হে আল্লাহ! আমার হিসাব নিও সহজ করে।
“তাদের নীতি হয়, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক ও বন্ধন অক্ষুণœ রাখার হুকুম দিয়েছেন সেগুলো তারা অক্ষুণœ রাখে, নিজেদের রবকে ভয় করে এবং তাদের থেকে কড়া হিসাব না নেয়া হয় এই ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে।” এমন সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক যেগুলো প্রতিষ্ঠিত হলেই মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ ও সাফল্য নিশ্চিত হয়। বিশ্ব মুসলিমদের মাঝে অশান্তির প্রধান কারণ হলো, তারা আজ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শতধা বিভক্ত হয়ে গেছে। হোক তাদের ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক বা হোক তা ধর্মীয়। আল্লাহর ভয় ও আখিরাতের কড়ায় গণ্ডায় হিসাব দিতে হবে সে ভয়ও তাদেরকে বিচলিত করে না। অথচ স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সা: এ হিসাবের ভয়েও বিচলিত হতেন। তিনি হযরত আয়েশা রা:কে নামাজে এ দো’আ করতে শিখিয়েছেন “আল্লাহুম্মা হাসিবনি হিসাবাই ইয়াসিরা” হে আল্লাহ! আমার হিসাব নিও সহজ করে।
কার্যক্রম বা বৈশিষ্ট্য
“তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে, নামায কায়েম করে, আমার দেয়া রিজিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে। আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই।” তারা সবর করে মানে নিজেদের প্রবৃত্তি ও আকাক্সক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে, অনুভূতি ও ঝোঁক প্রবণতাকে নিয়ম ও সীমার মধ্যে আবদ্ধ রাখে, আল্লাহর নাফরমানিতে বিভিন্ন স্বার্থলাভ ও লোভ-লালসার চরিতার্থ হওয়ার সুযোগ দেখে পা পিছলে যায় না এবং আল্লাহর হুকুম মেনে চলার পথে যেসব ক্ষতি ও কষ্টের আশঙ্কা দেখা দেয় সেসব বরদাশ্ত করে যেতে থাকে। এ দৃষ্টিতে বিচার করলে মু’মিন আসলে পুরোপুরি সবরের জীবন যাপন করে। কারণ সে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় এবং আখেরাতের স্থায়ী পরিণাম ফলের প্রতি দৃষ্টি রেখে এ দুনিয়ার আত্মসংযম করতে থাকে এবং সবরের সাথে মনের প্রতিটি পাপ প্রবণতার মোকাবেলা করে। নামাজ কায়েম করে। সমাজে পুরোপুরি নামায যাতে চালু হয়ে যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করে। আর আল্লাহর দেয়া রিজিক হতে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে। ফরজ খরচ তথা যাকাত এবং অন্যান্য সাদাকা এবং আল্লাহর রাস্তায় দান করে।
তারা মন্দের মোকাবেলায় একই মন্দ বা অন্য কোন মন্দ কাজ দিয়ে করে না বরং মন্দের মোকাবেলায় ভালো কোন কাজের মাধ্যমে করে। অন্যায়কে প্রতিহত করার জন্য অন্যায়ের সাহায্য গ্রহণ না করে ন্যায়ের সাহায্য গ্রহণ করে। কেউ তাদের প্রতি যতই জুলুম করুক না কেন তার জবাবে তারা পাল্টা জুলুম করে না বরং ইনসাফ করে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে যতই মিথ্যাচার করুক না কেন জবাবে তারা পাল্টা সত্যই বলে। কেউ তাদের সাথে যতই বিশ্বাস ভঙ্গ করুক না কেন জবাবে তারা বিশ্বস্ত আচরণই করে থাকে। রাসূলুল্লাহর সা: নিম্নোক্ত হাদিসটি এ অর্থই প্রকাশ করে: “তোমরা নিজেদের কার্যধারাকে অন্যের কর্মধারার অনুসারী করো না। এ কথা বলা ঠিক নয় যে লোকেরা ভালো করলে আমরা ভালো করবো এবং লোকেরা জুলুম করলে আমরাও জুলুম করবো। তোমরা নিজেদেরকে একটি নিয়মের অধীন করো। যদি লোকেরা সদাচরণ করে তোমরাও সদাচরণ করো। আর যদি লোকেরা তোমাদের প্রতি অসৎ আচরণ করে তাহলে তোমরা জুলুম করো না।” রাসূলের সা: আরেকটি হাদিস একই অর্থ প্রকাশ করে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, আল্লাহ আমাকে নয়টি কাজের হুকুম দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনি এ চারটি কথা বলেছেন : কারো প্রতি সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট যাই থাকি না কেন সর্বাবস্থায় আমি যেন ইনসাফের কথা বলি। যে আমার অধিকার হরণ করে আমি যেন তার অধিকার আদায় করি। যে আমাকে বঞ্চিত করবে আমি যেন তাকে দান করি। আর যে আমার প্রতি জুলুম করবে আমি যেন তাকে মাফ করি। একই অর্থ প্রকাশ করে নিম্নের হাদিসটিও। “যে তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তুমি তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না।” হযরত উমরের রা: উক্তিটিও এ অর্থ প্রকাশ করে : “যে ব্যক্তি তোমার প্রতি আচরণ করার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে না তুমি আল্লাহকে ভয় করে তার প্রতি আচরণ করো।”
“তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে, নামায কায়েম করে, আমার দেয়া রিজিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে। আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই।” তারা সবর করে মানে নিজেদের প্রবৃত্তি ও আকাক্সক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে, অনুভূতি ও ঝোঁক প্রবণতাকে নিয়ম ও সীমার মধ্যে আবদ্ধ রাখে, আল্লাহর নাফরমানিতে বিভিন্ন স্বার্থলাভ ও লোভ-লালসার চরিতার্থ হওয়ার সুযোগ দেখে পা পিছলে যায় না এবং আল্লাহর হুকুম মেনে চলার পথে যেসব ক্ষতি ও কষ্টের আশঙ্কা দেখা দেয় সেসব বরদাশ্ত করে যেতে থাকে। এ দৃষ্টিতে বিচার করলে মু’মিন আসলে পুরোপুরি সবরের জীবন যাপন করে। কারণ সে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় এবং আখেরাতের স্থায়ী পরিণাম ফলের প্রতি দৃষ্টি রেখে এ দুনিয়ার আত্মসংযম করতে থাকে এবং সবরের সাথে মনের প্রতিটি পাপ প্রবণতার মোকাবেলা করে। নামাজ কায়েম করে। সমাজে পুরোপুরি নামায যাতে চালু হয়ে যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করে। আর আল্লাহর দেয়া রিজিক হতে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে। ফরজ খরচ তথা যাকাত এবং অন্যান্য সাদাকা এবং আল্লাহর রাস্তায় দান করে।
তারা মন্দের মোকাবেলায় একই মন্দ বা অন্য কোন মন্দ কাজ দিয়ে করে না বরং মন্দের মোকাবেলায় ভালো কোন কাজের মাধ্যমে করে। অন্যায়কে প্রতিহত করার জন্য অন্যায়ের সাহায্য গ্রহণ না করে ন্যায়ের সাহায্য গ্রহণ করে। কেউ তাদের প্রতি যতই জুলুম করুক না কেন তার জবাবে তারা পাল্টা জুলুম করে না বরং ইনসাফ করে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে যতই মিথ্যাচার করুক না কেন জবাবে তারা পাল্টা সত্যই বলে। কেউ তাদের সাথে যতই বিশ্বাস ভঙ্গ করুক না কেন জবাবে তারা বিশ্বস্ত আচরণই করে থাকে। রাসূলুল্লাহর সা: নিম্নোক্ত হাদিসটি এ অর্থই প্রকাশ করে: “তোমরা নিজেদের কার্যধারাকে অন্যের কর্মধারার অনুসারী করো না। এ কথা বলা ঠিক নয় যে লোকেরা ভালো করলে আমরা ভালো করবো এবং লোকেরা জুলুম করলে আমরাও জুলুম করবো। তোমরা নিজেদেরকে একটি নিয়মের অধীন করো। যদি লোকেরা সদাচরণ করে তোমরাও সদাচরণ করো। আর যদি লোকেরা তোমাদের প্রতি অসৎ আচরণ করে তাহলে তোমরা জুলুম করো না।” রাসূলের সা: আরেকটি হাদিস একই অর্থ প্রকাশ করে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, আল্লাহ আমাকে নয়টি কাজের হুকুম দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনি এ চারটি কথা বলেছেন : কারো প্রতি সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট যাই থাকি না কেন সর্বাবস্থায় আমি যেন ইনসাফের কথা বলি। যে আমার অধিকার হরণ করে আমি যেন তার অধিকার আদায় করি। যে আমাকে বঞ্চিত করবে আমি যেন তাকে দান করি। আর যে আমার প্রতি জুলুম করবে আমি যেন তাকে মাফ করি। একই অর্থ প্রকাশ করে নিম্নের হাদিসটিও। “যে তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তুমি তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না।” হযরত উমরের রা: উক্তিটিও এ অর্থ প্রকাশ করে : “যে ব্যক্তি তোমার প্রতি আচরণ করার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে না তুমি আল্লাহকে ভয় করে তার প্রতি আচরণ করো।”
এ ভাগ্যবান কারা
আল্লাহ তা’আলা বলেন, “ধৈর্যশীল ছাড়া এ গুণ আর কারো ভাগ্যে জোটে না। এবং অতি ভাগ্যবান ছাড়া এ মর্যাদা আর কেউ লাভ করতে পারে না।” (সূরা হা-মিম আস সেজদা : ৩৫) অসৎ কর্ম বা দুষ্কর্মকে সৎকর্ম দ্বারা মোকাবেলা করা কোন ছেলেখেলা নয়। এ জন্য দরকার সাহসী লোকের। এ জন্য দরকার দৃঢ়সঙ্কল্প, সাহস, অপরিসীম সহনশীলতা এবং চরম আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। কেবল সেই ব্যক্তিই এ কাজ করতে পারে যে বুঝে শুনে ন্যায় ও সত্যকে সমুন্নত করার জন্য কাজ করার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেছে, যে তার প্রবৃত্তিকে সম্পূর্ণরূপে জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিচার শক্তির অনুগত করে নিয়েছে এবং যার মধ্যে নেকি ও সততা এমন গভীরভাবে শিকড় গেড়ে বসেছে যে, বিরোধীদের কোন অপকর্ম ও নোংরামি তাকে তার উচ্চাসন থেকে নামিয়ে আনতে সফল হতে পারে না। অত্যন্ত উঁচু মর্যাদার মানুষই কেবল এসব গুণাবলির অধিকারী হয়ে থাকে। আর যে ব্যক্তি এসব গুণাবলির অধিকারী হয় দুনিয়ার কোন শক্তিই তাকে সাফল্যের মনযিলে মকসুদে পৌঁছা থেকে বিরত রাখতে পারে না। নিচু প্রকৃতির মানুষ তাদের হীন চক্রান্ত জঘন্য কৌশল এবং কুৎসিৎ আচরণ দ্বারা তাকে পরাস্ত করবে তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, “ধৈর্যশীল ছাড়া এ গুণ আর কারো ভাগ্যে জোটে না। এবং অতি ভাগ্যবান ছাড়া এ মর্যাদা আর কেউ লাভ করতে পারে না।” (সূরা হা-মিম আস সেজদা : ৩৫) অসৎ কর্ম বা দুষ্কর্মকে সৎকর্ম দ্বারা মোকাবেলা করা কোন ছেলেখেলা নয়। এ জন্য দরকার সাহসী লোকের। এ জন্য দরকার দৃঢ়সঙ্কল্প, সাহস, অপরিসীম সহনশীলতা এবং চরম আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। কেবল সেই ব্যক্তিই এ কাজ করতে পারে যে বুঝে শুনে ন্যায় ও সত্যকে সমুন্নত করার জন্য কাজ করার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেছে, যে তার প্রবৃত্তিকে সম্পূর্ণরূপে জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিচার শক্তির অনুগত করে নিয়েছে এবং যার মধ্যে নেকি ও সততা এমন গভীরভাবে শিকড় গেড়ে বসেছে যে, বিরোধীদের কোন অপকর্ম ও নোংরামি তাকে তার উচ্চাসন থেকে নামিয়ে আনতে সফল হতে পারে না। অত্যন্ত উঁচু মর্যাদার মানুষই কেবল এসব গুণাবলির অধিকারী হয়ে থাকে। আর যে ব্যক্তি এসব গুণাবলির অধিকারী হয় দুনিয়ার কোন শক্তিই তাকে সাফল্যের মনযিলে মকসুদে পৌঁছা থেকে বিরত রাখতে পারে না। নিচু প্রকৃতির মানুষ তাদের হীন চক্রান্ত জঘন্য কৌশল এবং কুৎসিৎ আচরণ দ্বারা তাকে পরাস্ত করবে তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
পুুরস্কার
এ ব্যক্তিদের সাথে আখেরাতে কি ধরনের আচরণ করা হবে নিম্নোক্ত আয়াতে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে : “আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই। তারা নিজেরা এতে প্রবেশ করবে এবং তাদের সাথে বাপ-দাদারা ও স্ত্রী-সন্তানদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্মশীল হবে তারাও তাদের সাথে সেখানে থাকবে। ফেরেশতারা সবদিক থেকে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য আসবে এবং বলবে : “তোমাদের প্রতি শান্তি। তোমরা দুনিয়ায় যেভাবে সবর করে এসেছো তার বিনিময়ে তোমরা এর অধিকারী হয়েছো।” -কাজেই কতই চমৎকার এ আখেরাতের গৃহ!” (সূরা আর রাদ : ২২-২৪) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন, “যারা আত্মসংযমী তাদেরকে বিনা হিসেবেই প্রতিদান দেয়া হবে।” ওমর রা: বলেন, “যখন আমরা আত্মসংযমী ছিলাম, তখনকার জীবনই সুন্দর ছিল।” (বুখারি কিতাবুর রিকাক)
এ ব্যক্তিদের সাথে আখেরাতে কি ধরনের আচরণ করা হবে নিম্নোক্ত আয়াতে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে : “আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই। তারা নিজেরা এতে প্রবেশ করবে এবং তাদের সাথে বাপ-দাদারা ও স্ত্রী-সন্তানদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্মশীল হবে তারাও তাদের সাথে সেখানে থাকবে। ফেরেশতারা সবদিক থেকে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য আসবে এবং বলবে : “তোমাদের প্রতি শান্তি। তোমরা দুনিয়ায় যেভাবে সবর করে এসেছো তার বিনিময়ে তোমরা এর অধিকারী হয়েছো।” -কাজেই কতই চমৎকার এ আখেরাতের গৃহ!” (সূরা আর রাদ : ২২-২৪) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন, “যারা আত্মসংযমী তাদেরকে বিনা হিসেবেই প্রতিদান দেয়া হবে।” ওমর রা: বলেন, “যখন আমরা আত্মসংযমী ছিলাম, তখনকার জীবনই সুন্দর ছিল।” (বুখারি কিতাবুর রিকাক)
লেখক : ইসলামী গবেষক
Source: www.chhatrasangbadbd.com
Subscribe to:
Posts (Atom)
Popular Posts
-
(জবাবদানকারী একজন ক্বওমী আলেম:) বন্ধুরা, ফেসবুক খুললেই দেখা যায়, মওদুদী ছাহাবা বিদ্বেষী, জামায়াত শিবির সাহাবা বিদ্বেষী, বিশেষ করে লা মা...
-
Official Website: Bangla: https://jamaat-e-islami.org English: https://www.jamaat-e-islami.org/en/ E-book: www.bjilibrary.c...
-
লিখেছেনঃ জীবন রহমান হৃদয় সৌদি বাদশাহ এর আমন্ত্রণে ১৯৬১ সালের ডিসেম্বর মাসে রিয়াদে পৌঁছেন সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী(রঃ)। আলোচনার এ...