Showing posts with label সমালোচনার জবাব. Show all posts
Showing posts with label সমালোচনার জবাব. Show all posts

Friday, August 16, 2019

আল্লামা মওদুদী রহঃ কি সত্যিই ছাহাবা বিদ্বেষী ছিলেন? জবাবদানে মাওলানা মাসউদুর রহমান


(জবাবদানকারী একজন ক্বওমী আলেম:) বন্ধুরা, ফেসবুক খুললেই দেখা যায়, মওদুদী ছাহাবা বিদ্বেষী, জামায়াত শিবির সাহাবা বিদ্বেষী, বিশেষ করে লা মাযহাবী মানেই বিনোদন পেইজে। যদি ও এ পর্যন্ত কেউ তার দালিলিক তথ্য প্রমাণ পেশ করতে পারেননি।

বন্ধুরা, এক শ্রেণীর ধর্ম ব‍্যবসায়ী ওলামা হযরত রয়েছেন, যারা আল্লামা মওদুদীকে ছাহাবা বিদ্বেষী বানাবার হরখামাশা কসরত করে থাকেন। আলহামদুলিল্লাহ তাদের এই মওদুদী বিরোধী প্রচারণার তাবিজ বাজারে অচল হয়ে পড়েছে। কারণ ঈমানদার জনগণ আসল হক্ব দল কারা, চিহ্নিত করতে পেরেছেন। আসল কথা হলো, আল্লামা মওদুদী সাহাবায়ে কেরামের নকশায়ে কদম অর্থাৎ তাদের আদর্শ পুরোপুরি কি ভাবে অনুসরণ করা যায়, প্রায় দীর্ঘ ষাট বছর গবেষণা করে সেই ফর্মুলাই তিনি আমাদের সামনে পেশ করেছেন।
বন্ধুরা, আপনারা যাদের জামায়াত নেতা কর্মীদের সঙ্গে উঠাবসা আছে, আপনারা সাক্ষী প্রদান করুন! কোন জামায়াত নেতা কর্মীদের সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা করতে দেখেছেন? বরং জামায়াতের নেতা কর্মীরা সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ একজেক্ট বা অবিকল অনুসরণ করতে গিয়ে, শতো শতো নেতা কর্মী দ্বীনের জন্য জীবন দিয়েছেন, চাকরি হারিয়েছেন, জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, হাজার হাজার মিথ্যা ও সাজানোর মামলার হুলিয়া নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
আল্লাহ পাক সূরা আল ফাতাহর-২৯ নং আয়াতে সাহাবায়ে কেরামের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, তারা হবে কুফফার শক্তির উপর কঠোর। তারা কখনোই জালিম শক্তির সাথে আপোস করবে না। আলহামদুলিল্লাহ জামায়াত ছাহাবায়ে কেরামের আদর্শ অনুসরণে সমস্ত বাতিল মতাদর্শের মোকাবেলায় শক্ত ভাবে দাড়িয়ে রয়েছেন।
বন্ধুরা, আপনারাই বলুন সমালোচনাকারীদের দ্বীনি ক্ষেত্রে এ উপমহাদেশে কি অবদান রয়েছে? সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ কি মানছুর হাল্লাজের আকিদা বিশ্বাস প্রচার করা? সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ কি সরলপ্রান মুসলমানদের পীর মুর্শিদ ও মাজার পুজারী বানানো? সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ কি তাবিজ কবজ বিক্রি করা? সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ কি মুরীদ দিয়ে হাত পা টিপানো? সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ কি খানকায় বসে বসে ইল্লাল্লাহ যিকির করা?
বন্ধুরা, আমি জোর দিয়ে বলতে পারি আল্লামা মওদুদী কখনোই কোন ছাহাবীর সমালোচনা করেননি বরং তার অনবদ্য লেখনিতে সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ পুরোপুরি ফুটে উঠেছে। আল্লামা মানজুরে নূমানী যিনি মওদুদীকে খুব কাছে থেকে দেখেছেন, তিনি তার মওদুদী চে মেরা রেফাকাত বইয়ে মওদুদী ছাহাবা বিদ্বেষী ছিলেন, উল্লেখ করতে পারেননি।
তার পর ও আমরা বলতে চাই, মওদুদী কোন নবী ছাহাবা নন যে তার ভুল হবে না। জামায়াত তার ভুল গ্রহণ করেননি আর করবে ও না।
সমালোচকদের হেদায়েত হোক দোয়া রইল।
আল্লাহ কবুল করুন আমীন।
আংশিক সংগৃহীত

শাহাদাতুর রহমান সোহেল: 
জামায়াতে ইসলামী দ্ব্যর্থহীনভাবে বিশ্বাস করে যে, সাহাবায়ে কেরাম (রা:) নবী করিম (সা: )-এর আনুগত্যের শ্রেষ্ঠ আদর্শ নমুনা (দেখুন- ইকামাতে দ্বীন, অধ্যাপক গোলাম আজম: পৃষ্ঠা-৫১, ) এবং ইজমায়ে সাহাবা শরীয়তের অকাট্য দলিল। আল্লামা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী (রহঃ) বলেন: “কোরআন ও হাদীসের মাপকাঠিতে পরখ করে আমরা এরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, সাহাবাদের জামায়াত একটি সত্যপন্থি জামায়াত। তাদের (সাহাবায়ে কেরামদের) ঐকমত্য আমরা শরীয়তের প্রামাণ্য দলিলরূপে এজন্য মেনে থাকি যে, কোরআন ও হাদীসের সামান্যতম বিরোধমূলক বিষয়ে সকল সাহাবাদের একমত হওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব” (দেখুন: তরজুমানুল কোরআন, জিলদ-৫৬, সংখ্যা-৫)।  জামায়তে ইসলামীর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে সাহাবায়ে কেরামের সত্যনিষ্ঠ ও সংগ্রামী জীবনধারা দৃষ্টান্ত হিসাবে তুলে ধরে তার আলোকে কর্মীদের গড়ে তোলা হয়। সাহাবায়ে কেরামের জীবনী জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের অবশ্য পাঠ্য, যেমন-আবদুল মাবুদের লিখিত কয়েক খন্ডে বিভক্ত ‘আসহাবে রাছুলের জীবনকথা' গ্রন্থ। এভাবে জামায়াতে ইসলামীর সামগ্রিক কর্মকান্ডে সাহাবায়ে কেরামের জীবনাদর্শের ব্যাপকচর্চা ও অনুশীলন রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য ইসলামী সংগঠনে সাহাবায়ে কেরামের জীবনাদর্শের এ ধরণের ব্যাপক চর্চা নাই। অনেক ইসলামী সংগঠনে পরবর্তী কালের কোন কোন ইসলামী ব্যক্তিত্ব বা পীর-অলির জীবনীচর্চাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। সাহাবাদের অতিভক্তি শুধু তাদের মুখে মুখেই, এই ভক্তি বাস্তবে খুঁজে পাওয়া দুরূহ। সাহাবাদের মত ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করার আকীদা ও আমল জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সকল সংগঠনেই ব্যাপক দেখা যায়।

মুসলমানদের মধ্যে অসংখ্য দলের মধ্যে থেকে নাজাতপাপ্ত জামায়াতের পরিচয় প্রসঙ্গে একটি হাদীসে বর্ণিত রয়েছে: হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমার উম্মত তা’ই করবে যা করেছে বনী ইসরাঈলের লোকেরা। এক জুতা অপর জুতার সমান হওয়ার মত। এমনকি যদি ওদের মাঝে কেউ মায়ের সাথে প্রকাশ্যে জিনা করে থাকে, তাহলে এই উম্মতের মাঝেও এরকম ব্যক্তি হবে যে একাজটি করবে। আর নিশ্চয় বনী ইসরাঈল ছিল ৭২ দলে বিভক্ত। আর আমার উম্মত হবে ৭৩ দলে বিভক্ত। এইসব দলই হবে জাহান্নামী একটি দল ছাড়া। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন-সেই দলটি কারা? নবীজী (সাঃ) বললেন-যারা আমার ও আমার সাহাবাদের মত ও পথ অনুসরণ করবে। {সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২৬৪১, আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৭৬৫৯, আল মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৮৮৯, কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৬০}

অতএব এ ভাষ্য থেকে বুঝা যায় যে, যে দল রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এবং তার সাহাবাদের নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে কেবল তারা সত্যপন্থী নাজাতপাপ্ত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভূক্ত। এ সম্পর্কে হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম (ফাজেলে দেওবন্দ) বলেন: “সাহাবীগণ মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগে ইসলামী বিধানকে বাস্তবায়িত করার জন্য অবিরাম চেষ্টা সাধনা এবং আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়েছেন। আর আজ জামায়াতে ইসলামী কর্মীগণও নিষ্ঠার সাথে ইসলামকে বিজয়ী আদর্শরূপে বাস্তবায়িত করার জন্য দুর্নিবার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলা চলে যে, হাদীসের আলোকে জামায়াতে ইসলামী অবশ্যই আহলে সুন্নাভূক্ত সত্যপন্থী দল” (জামায়াতে ইসলামীর বিরোধীতা কেন? পৃষ্ঠা নং ৩২)।

পবিত্র কুরআনের সুরা ফাতহতে বলা হয়েছে: “মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল৷ আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে আপোষহীন এবং নিজেরা পরস্পর দয়া পরবশ৷  তোমরা যখনই দেখবে তখন তাদেরকে চেহারায় সিজদার চিহ্ন বর্তমান যা দিয়ে তাদেরকে আলাদা চিনে নেয়া যায়৷ তাদের এ পরিচয় তাওরাতে দেয়া হয়েছে৷  আর ইনযীলে তাদের উপমা পেশ করা হয়েছে এই বলে  যে, একটি শস্যক্ষেত যা প্রথমে অঙ্কুরোদগম ঘটালো৷ পরে তাকে শক্তি যোগালো তারপর তা শক্ত ও মজবুত হয়ে স্বীয় কাণ্ডে ভর করে দাঁড়ালো৷ যা কৃষককে খুশী করে কিন্তু কাফের তার পরিপুষ্টি লাভ দেখে মনোকষ্ট পায়৷ এ শ্রেণীর লোক যারা ঈমান আনয়ন করছে এবং সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও বড় পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷”

এই আয়াতের শেষাংশের তাফসীরে আল্লামা মওদূদী (রহঃ) সমস্ত সাহাবাই যে নাজাতপ্রাপ্ত তা প্রমাণ করেছেন । তাফহীমুল কুরআনে তাফসীর দেখুন। 

নীচের ই-বুক দুইটি ডাউনলোড করে পড়ুন প্লীজ: 



আক্বীদা বিষয়ক অভিযোগের জবাবে আল্লামা সাঈদী (হাফিঃ)
(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)

Wednesday, August 7, 2019

জামায়াত শিবিরের সাড়ে তিন হাত বডিতে সত‍্যিই কি ইসলাম নেই? - জবাবদানে মাওলানা মাসউদুর রহমান


(জবাবদানকারী একজন ক্বওমী আলেম:) বন্ধুরা, সমালোচকরা প্রায়ই বলে থাকেন, বিশেষ করে ক্বওমী ঘরনার লোকজন গিবত করে বেড়ান জামায়াত শিবিরের সারে তিন হাত বডিতে ইসলাম নেই এবং তাদের আমল নেই।

আমার সন্দেহ হয় সমালোচক শ্রেণী ইসলাম ও আমল কাকে বলে তার মূল তত্ত্ব কথা জানেন কি না? জামায়াত শিবিরের লোকজন কোরআন সুন্নাহ ও ঈমান আমলকে যে ভাবে প্রাকটিস করে থাকেন, আমি জোর গলায় বলতে পারি সমালোচক শ্রেণী তার সিকিভাগও করেন না।


জামায়াত শিবিরের লোকজনের উপর স্বরণকালের যে ভয়াবহ জুলুম নির্যাতন চলছে, নিকট অতীতে তার নযির আছে কি না আমার জানা নেই।
এমন একটি দলের নাম বলুন, এতো জুলুম নির্যাতনের পর টিকে থাকতে পারে? তার পর ও যারা বলে বেড়ায় জামায়াত শিবিরের আমল ঠিক নেই, তাদের ব‍্যপারটি আল্লাহর হাওলায় ছেড়ে দিলাম। আমি বিশ্বাস করি সমালোচক শ্রেণীর গোটা আমলকে যদি একত্রিত করা হয়, একজন মাজলুম জামায়াতী ভাইয়ের সমান হবে না।

আল্লাহর রহমত আছে বলেই একটি নিরীহ ক্ষুদ্র দল বাতিলের মোকাবেলায় ইস্পাত কঠিন ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়ে টিকে আছে।

তবে এ কথা ঠিক যে, জামায়াত শিবিরের কিছু লোক শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাই পড়ে থাকেন। আমি বলি তারা যদি পায়জামা-পাঞ্জাবি পড়তো, তো ভালো ছিল।
মালয়শিয়া ও মিশরের বড়ো বড়ো খতীবগণ শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাই পড়ে খুতবা পাঠ করে থাকেন, যদি শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাই এতোই খারাপ হতো, তাহলে তারা পড়ে কেন? আমি জানি যারা শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাইয়ের সমালোচনা করে থাকেন, তারা টাই প‍্যান্ট পড়লে ওয়ালা থেকে নিয়মিত চাঁদা কালেকশন করে থাকেন, টাই প‍্যান্ট পড়লে ওয়ালার সাথে তাদের দহরম-মহরম চোখে পড়ার মতো। তখন কি তাদের শরম লাগে না! কথায় বলে:  যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা !
জানি তার পর ও সমালোচকদের মুখ বন্ধ হবে না। আসুন দরদ নিয়ে একে অপরের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করি! আল্লাহ তৌফিক দান করুন আমীন।
(মাওলানা মাসউদুর রহমান, নবীনগর, বি. বাড়িয়া)

Wednesday, August 16, 2017

রাছুলুল্লাহ (সাঃ)-এর বহু বিবাহের সমালোচনার জবাবে প্রখ্যাত বৃটিশ নারী অধিকার কর্মী

অনেক অবিবেচক নাস্তিক আজকাল বুঝে কিংবা না বুঝেই রাসূল স. এর বিবাহ নিয়ে কটাক্ষ বা অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে দেখা যায়। যা সত্যিই দু:খজনক। তাদের খুবই সুন্দর জবাব দিয়েছেন Annie Besant . . .

প্রখ্যাত বৃটিশ নারী অধিকার কর্মী, সমাজতত্ত্ববিদ ও লেখিকা Annie Besant বলেন,
"কিন্তু তুমি কি আমাকে বুঝাতে চাইছ ভরা যৌবনের উচ্ছাসে পরিপূর্ণ সেই টগবগে যুবক সম্পর্কে, যে যুবক ২৪ বছর বয়সে তার চেয়ে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন এবং ২৬ বছর যাবৎ তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন, তিনি ৫০ বছর বয়সের পড়তি যৌবনে এসে বিয়ে করেছিলেন কেবল যৌনাকাংখা ও যৌন তাড়না মেটাতে? না, মানুষের জীবনকে এভাবে বিচার করতে হয় না। অধিকন্তু, যদি তুমি ঐসব মহিলাদের দিকে লক্ষ্য কর যাদেরকে তিনি বিয়ে করেছিলেন, তাদের প্রত্যেকের সাথেই হয় মৈত্রীচুক্তির ব্যাপার ছিল, অথবা তাঁর ছাহাবীদের জন্য কিছু প্রাপ্তিযোগের বিষয় ছিল কিংবা মহিলাটির জন্য আশ্রয় ও নিরাপত্তার খুব প্রয়োজন ছিল।"
"Annie Besant ( http://en.wikipedia.org/wiki/Annie_Besant), The Life and Teachings of Muhammad (1932), p. 4)

Friday, July 21, 2017

মাওলানা মওদূদী (রহঃ) কি আলিম ছিলেন? কোন কোন ইসলামপন্থীর সমােলাচনার নায্য জবাব

লিখেছেনঃ সিরাজুল ইসলাম

মাওলানা মওদূদী (রহঃ) ও তার, চিন্তাধারা, তাঁকে যাঁরা চিনতেন এবং তাঁর সাথে কাজ করতেন তাঁরা জানতেন তিনি একজন ‘আলিম; এমনকি যাঁরা পরে তাঁর সংশ্রব থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন তাঁরাও তাঁর আলিম হওয়াকে অস্বীকার করতেন না। তাঁরা তাঁর সাথে অন্য বিষয়ে মতভেদ করতেন সেজন্য দূরে সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু লোক যারা নিজেরা মূলত আলিম নয়, তারাই তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটায় এবং বলে যে তিনি আলিম ছিলেন না।


ইসলামে আলিম হবার নিয়ম কী? আলিম হবার নিয়ম হচ্ছে আপনি একজন আলিমের তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট বিষয় অধ্যয়ন করবেন। এরপর আপনার উস্তায যখন নির্দিষ্ট বিষয়ে আপনি পারঙ্গম হয়েছেন বলে নিশ্চিত হবেন তখন তিনি আপনাকে ইজাযাহ [সনদ] দান করবেন। এভাবে আপনি ঐ বিষয়ে আলিম হবেন। ইসলামে আলিম হবার এটাই হচ্ছে ট্র্যাডিশনাল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতেই আলিম হয়েছেন আমাদের আগের দিনের উলামারা, আয়িম্মা আল-মুজতাহিদীন, মুহাদ্দিসীনগণ সবাই। এখনকার মাদ্রাসা বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি,এইচ-ডি নেয়াটা মূলত ঐ ইজাযাহ সিস্টেম থেকে আসা পথ। উস্তায সায়্যিদ আবুল আলা মওদূদী (রহঃ) মূলত সেই ট্র্যাডিশনাল ইসলামিক ইজাযাহ পদ্ধতিতে গড়ে উঠা আলিম। তিনি ইসলামের মৌলিক সবগুলো বিষয়ে তৎকালীন ভারতের প্রসিদ্ধ আলিমদের থেকে ইজাযাহ প্রাপ্ত। তাই তাঁকে যাঁরা চিনতেন তেমন বিরোধীরাও তাঁর আলিম হওয়া নিয়ে কথা বলত না। তাঁর পরিবারের কাছে তাঁর ইজাযাহগুলো এখনও সংরক্ষিত। মুশকিল হচ্ছে তাঁর জীবনীকাররা তাঁর ইজাযাহগুলো সম্পর্কে লিখেন নাই। এমনকি জামায়াতে ইসলামী থেকেও তাঁর যে সমস্ত জীবনী বের করা হয়েছে – যেমন আব্বাস আলী খানের লিখা মাস্টারপিস 'মাওলানা মওদূদী, একটি জীবন, একটি আন্দোলন, একটি ইতিহাস'– সেগুলোতেও এগুলোর উল্লেখ নাই। এর কারণ সম্ভবত উস্তায মওদূদীর (রহঃ)প্রচার বিমুখতা। যাই হোক আমি নিজে তাঁর সম্পর্কে পড়তে গিয়ে অল্প কয়েকটা বিষয়ে জানতে পারলাম। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট ফকীহ এবং সালাফী আলিম ডঃ সায়্যিদ আব্দুল হালিম মুহাম্মদ হুসাইন [হাফিজাহুল্লাহ] এর লিখা 'নাযারাত ফী ফিকরি আবীল-আলা আল-মওদূদী' –ﻧﻈﺎﺭﺍﺕ ﻓﻲ ﻓﻜﺮ ﺃﺑﻲ ﺍﻷﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻮﺩﻭ কিতাবে মাওলানা মওদূদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার যে বিবরণ তিনি দিয়েছেন তা থেকে আমি পাঠকদের জন্য উল্লেখ করছি-
১। আরবী ভাষা, নাহু, সরফ, আল-মা’ক্বুলাত ওয়াল-বালাগাহ ওয়াল মা’আনীঃ

এগুলোতে তিনি ইজাজাহ লাভ করেছেন দিল্লীর দারুল

উলুমে ভারতের প্রখ্যাত আলিম মাওলানা শায়খ আব্দুস-সালাম নিয়াজীর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে।
২। হাদীস ও উলুম আল-হাদীসঃ

শায়খ ইশফাক্বুদ্দীন কান্দাহলাবীর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে এ বিষয়ে ইজাযাহ লাভ করেন তিনি।

৩। ফিক্বহ, তাফসীর বায়দাওয়ী এবং আল-মাতূল ফী ‘ইলম আল-মা’আনী ওয়াল-বালাগাহঃ

এ বিষয়গুলোতে তিনি ইজাযাহ লাভ করেন শায়খ শরীফুল্লাহর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে।

৪। ইংরেজী ভাষাঃ

মৌলভী মুহাম্মদ ফাদিল এর হাতে মাত্র চার মাসে তিনি ইংরেজী ভাষা শিক্ষায় বুৎপত্তি লাভ করেন।

ডঃ শায়খ আব্দুস-সালাম আযাদী নীচে মন্তব্যে উস্তায মওদূদীর (রহঃ) শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আরো লিখেছেনঃ

উস্তায নাদীমুল্লাহ হাসনাইন ও শায়খ নিয়ায ফাতেহ পুরির কাছ থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। মুহাম্মাদ ফাদিল এর কাছে শুধু ইংরেজি ভাষা না, ইতিহাস, দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান ও বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক আলোচনা পড়েছেন। তিনি মাওলানা ইশফাকুর রহমান কান্ধল্ভীর কাছ থেকে হাদীস ফিকহ ও আরবী সাহিত্য পাঠদানের ইজাযাহ নেন ১৯২৭ সালে এবং তিরমিযি ও মুওয়াত্তা ইমাম মালিক শিক্ষা দানের ইজাযাত গ্রহন করেন ১৯২৮ সনে। এই দু বছর তিনি সম্পূর্ণ সময় ব্যয় করেছেন লেখা পড়ার পেছনে। দেওবন্দে তিনি তাদের পত্রিকা আল জামইয়্যাতের সম্পাদক তখনই হতে পেরেছেন যখন সেখানকার আলিমরা তাঁকে সার্টিফাই করেছেন। কিছু মুর্খ লোক বলে "তিনি আলিম ছিলেন না"। তারা জানেন না মাওলানার অনেক বই বুঝতে হলে ছোট খাট আলেমদের পক্ষেও সম্ভব হবে না। ইসলামে যখন কাউকে আলিম বলা হয় তখন মাদ্রাসা পাশ কাউকে বুঝায় না। আলিম একটা বিরাট ব্যাপার। সায়্যিদ মওদূদী (রহঃ) মূলত আলিম শব্দটার যথার্থ অর্থেই আলিম। এটা কারো ভুল ভাঙ্গানোর জন্য না, বরং যারা অন্যায় অভিযোগের কোন সন্তোষজনক জবাব জানতেন না তাদের জন্য।

আমাদের ঘোষনা, আমাদের চ্যালেঞ্জ:
আল্লামা মওদুদী (রহ.) শুধু আলেমই নন, 
বরং বিশ্বব্যাপী অসংখ্য আলেমের উস্তাদ।
Please brwose this label link and see all post: 

আমাদের দোয়া: 
হে আল্লাহ! হে সমস্ত ক্ষমতার মালিক! আল্লাহ’র দ্বীনের এই একনিষ্ঠ মুজাহিদকে যারা অপবাদ দেয়, অপমান করতে চায় তাদের হয় হেদায়াত দান করো, না হয় দুনিয়া ও আখেরাতে উচিত শিক্ষাদান করো, আমিন 

Popular Posts