Showing posts with label প্রশ্ন-উত্তর. Show all posts
Showing posts with label প্রশ্ন-উত্তর. Show all posts

Friday, July 21, 2017

মাওলানা মওদূদী (রহঃ) কি আলিম ছিলেন? কোন কোন ইসলামপন্থীর সমােলাচনার নায্য জবাব

লিখেছেনঃ সিরাজুল ইসলাম

মাওলানা মওদূদী (রহঃ) ও তার, চিন্তাধারা, তাঁকে যাঁরা চিনতেন এবং তাঁর সাথে কাজ করতেন তাঁরা জানতেন তিনি একজন ‘আলিম; এমনকি যাঁরা পরে তাঁর সংশ্রব থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন তাঁরাও তাঁর আলিম হওয়াকে অস্বীকার করতেন না। তাঁরা তাঁর সাথে অন্য বিষয়ে মতভেদ করতেন সেজন্য দূরে সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু লোক যারা নিজেরা মূলত আলিম নয়, তারাই তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটায় এবং বলে যে তিনি আলিম ছিলেন না।


ইসলামে আলিম হবার নিয়ম কী? আলিম হবার নিয়ম হচ্ছে আপনি একজন আলিমের তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট বিষয় অধ্যয়ন করবেন। এরপর আপনার উস্তায যখন নির্দিষ্ট বিষয়ে আপনি পারঙ্গম হয়েছেন বলে নিশ্চিত হবেন তখন তিনি আপনাকে ইজাযাহ [সনদ] দান করবেন। এভাবে আপনি ঐ বিষয়ে আলিম হবেন। ইসলামে আলিম হবার এটাই হচ্ছে ট্র্যাডিশনাল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতেই আলিম হয়েছেন আমাদের আগের দিনের উলামারা, আয়িম্মা আল-মুজতাহিদীন, মুহাদ্দিসীনগণ সবাই। এখনকার মাদ্রাসা বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি,এইচ-ডি নেয়াটা মূলত ঐ ইজাযাহ সিস্টেম থেকে আসা পথ। উস্তায সায়্যিদ আবুল আলা মওদূদী (রহঃ) মূলত সেই ট্র্যাডিশনাল ইসলামিক ইজাযাহ পদ্ধতিতে গড়ে উঠা আলিম। তিনি ইসলামের মৌলিক সবগুলো বিষয়ে তৎকালীন ভারতের প্রসিদ্ধ আলিমদের থেকে ইজাযাহ প্রাপ্ত। তাই তাঁকে যাঁরা চিনতেন তেমন বিরোধীরাও তাঁর আলিম হওয়া নিয়ে কথা বলত না। তাঁর পরিবারের কাছে তাঁর ইজাযাহগুলো এখনও সংরক্ষিত। মুশকিল হচ্ছে তাঁর জীবনীকাররা তাঁর ইজাযাহগুলো সম্পর্কে লিখেন নাই। এমনকি জামায়াতে ইসলামী থেকেও তাঁর যে সমস্ত জীবনী বের করা হয়েছে – যেমন আব্বাস আলী খানের লিখা মাস্টারপিস 'মাওলানা মওদূদী, একটি জীবন, একটি আন্দোলন, একটি ইতিহাস'– সেগুলোতেও এগুলোর উল্লেখ নাই। এর কারণ সম্ভবত উস্তায মওদূদীর (রহঃ)প্রচার বিমুখতা। যাই হোক আমি নিজে তাঁর সম্পর্কে পড়তে গিয়ে অল্প কয়েকটা বিষয়ে জানতে পারলাম। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট ফকীহ এবং সালাফী আলিম ডঃ সায়্যিদ আব্দুল হালিম মুহাম্মদ হুসাইন [হাফিজাহুল্লাহ] এর লিখা 'নাযারাত ফী ফিকরি আবীল-আলা আল-মওদূদী' –ﻧﻈﺎﺭﺍﺕ ﻓﻲ ﻓﻜﺮ ﺃﺑﻲ ﺍﻷﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻮﺩﻭ কিতাবে মাওলানা মওদূদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার যে বিবরণ তিনি দিয়েছেন তা থেকে আমি পাঠকদের জন্য উল্লেখ করছি-
১। আরবী ভাষা, নাহু, সরফ, আল-মা’ক্বুলাত ওয়াল-বালাগাহ ওয়াল মা’আনীঃ

এগুলোতে তিনি ইজাজাহ লাভ করেছেন দিল্লীর দারুল

উলুমে ভারতের প্রখ্যাত আলিম মাওলানা শায়খ আব্দুস-সালাম নিয়াজীর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে।
২। হাদীস ও উলুম আল-হাদীসঃ

শায়খ ইশফাক্বুদ্দীন কান্দাহলাবীর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে এ বিষয়ে ইজাযাহ লাভ করেন তিনি।

৩। ফিক্বহ, তাফসীর বায়দাওয়ী এবং আল-মাতূল ফী ‘ইলম আল-মা’আনী ওয়াল-বালাগাহঃ

এ বিষয়গুলোতে তিনি ইজাযাহ লাভ করেন শায়খ শরীফুল্লাহর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে।

৪। ইংরেজী ভাষাঃ

মৌলভী মুহাম্মদ ফাদিল এর হাতে মাত্র চার মাসে তিনি ইংরেজী ভাষা শিক্ষায় বুৎপত্তি লাভ করেন।

ডঃ শায়খ আব্দুস-সালাম আযাদী নীচে মন্তব্যে উস্তায মওদূদীর (রহঃ) শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আরো লিখেছেনঃ

উস্তায নাদীমুল্লাহ হাসনাইন ও শায়খ নিয়ায ফাতেহ পুরির কাছ থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। মুহাম্মাদ ফাদিল এর কাছে শুধু ইংরেজি ভাষা না, ইতিহাস, দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান ও বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক আলোচনা পড়েছেন। তিনি মাওলানা ইশফাকুর রহমান কান্ধল্ভীর কাছ থেকে হাদীস ফিকহ ও আরবী সাহিত্য পাঠদানের ইজাযাহ নেন ১৯২৭ সালে এবং তিরমিযি ও মুওয়াত্তা ইমাম মালিক শিক্ষা দানের ইজাযাত গ্রহন করেন ১৯২৮ সনে। এই দু বছর তিনি সম্পূর্ণ সময় ব্যয় করেছেন লেখা পড়ার পেছনে। দেওবন্দে তিনি তাদের পত্রিকা আল জামইয়্যাতের সম্পাদক তখনই হতে পেরেছেন যখন সেখানকার আলিমরা তাঁকে সার্টিফাই করেছেন। কিছু মুর্খ লোক বলে "তিনি আলিম ছিলেন না"। তারা জানেন না মাওলানার অনেক বই বুঝতে হলে ছোট খাট আলেমদের পক্ষেও সম্ভব হবে না। ইসলামে যখন কাউকে আলিম বলা হয় তখন মাদ্রাসা পাশ কাউকে বুঝায় না। আলিম একটা বিরাট ব্যাপার। সায়্যিদ মওদূদী (রহঃ) মূলত আলিম শব্দটার যথার্থ অর্থেই আলিম। এটা কারো ভুল ভাঙ্গানোর জন্য না, বরং যারা অন্যায় অভিযোগের কোন সন্তোষজনক জবাব জানতেন না তাদের জন্য।

আমাদের ঘোষনা, আমাদের চ্যালেঞ্জ:
আল্লামা মওদুদী (রহ.) শুধু আলেমই নন, 
বরং বিশ্বব্যাপী অসংখ্য আলেমের উস্তাদ।
Please brwose this label link and see all post: 

আমাদের দোয়া: 
হে আল্লাহ! হে সমস্ত ক্ষমতার মালিক! আল্লাহ’র দ্বীনের এই একনিষ্ঠ মুজাহিদকে যারা অপবাদ দেয়, অপমান করতে চায় তাদের হয় হেদায়াত দান করো, না হয় দুনিয়া ও আখেরাতে উচিত শিক্ষাদান করো, আমিন 

Thursday, July 20, 2017

প্রফেসার গোলাম আজম কি শহীদ? একটি পর্যালোচনা।


প্রফেসার গোলাম আজম কি শহীদ? একটি পর্যালোচনা।
-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল
আমি ফেইসবুকে একটা ভিডিও পোষ্ট দিয়েছিলাম। সেখানে কমেন্টে প্রফেসার গোলাম আজমের শাহাদাত সংক্রান্ত একটা পর্যালোচনা হয়েছে ।   আলোচনাটি আকর্ষনীয় হওয়ায় এখানে পোষ্ট আকারে সাজিয়ে দিলাম:

Shahadatur Rahman Sohel:
শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের শেষ ইন্টারভিউ. তার গ্রেফতার প্রসঙ্গেঃ 'জীবনে বহুবার গ্রেফতার হয়েছি আর মুমিনতো মৃত্যুকে পরোয়া করেনা, আর যদি অন্যায় ভাবে মৃত্যু দেয়া হয় তাহলে শহীদ হওয়ার গৌরব পাওয়া যায় সে হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মি হিসেবে শাহাদাত কামনা করি। সেজন্য ভয় কিসের? আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করা তো জায়েজই না, আল্লাহ কে ছাড়া কাউকে ভয় করার অনুমতি নাই'

S.m. Hasan:

শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম ?? শহীদ ?? how, why?

#ShahadaturRahmanSohel answer me please

Shahadatur Rahman Sohel:
আমরা হাদীস থেকে জানি- যারা সত্যিকার শাহাদাত কামনা করবে তারা বিছানায় শুয়ে মৃত্যুবরণ করলেও শহীদ হবে। প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের সমস্ত জীবন সাক্ষী দেয় তার শাহাদাত কামনা সত্যিকারের ছিল। তাছাড়া জালিমের কারাগারের হয়রানী সহ্য করে মৃত্যুবরণ করেও তিনি শহীদ হিসাবে গণ্য হবেন না -এটা তো আমার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয়। আমি মনে করি- অবশ্যই তিনি শহীদ। কেউ ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন। হে আল্লাহ! প্রফেসর গোলাম আযমকে উচ্চপর্যায়ের শাহাদাত দান কর এবং জান্নাতুল ফিরদৌস নসীব কর, আমীন।

Abu Sayeed:
"যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাই তাদের রবের কাছে ‘সিদ্দীক’ ও ‘শহীদ’ বলে গণ্য৷ তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও ‘নূর’ রয়েছে" (সুরা হাদীদ: ১৯ নং আঃ)৷ হাদীসে হযরত বারা ইবনে আযেব বর্ণনা করেছে যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একথা বলতে শুনেছেন যে, "আমার উম্মতের মু'মিনগণই শহীদ। " তারপর নবী (সা) সূরা হাদীদের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন (ইবনে জারীর)৷ ইবনে মারদুইয়া হযরত আবুদ দারদা থেকে এই একই অর্থের একটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "যে ব্যক্তি তার প্রাণ ও দীন বিপন্ন হবে ও কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে এ আশংকায় কোন দেশ বা ভূ-খণ্ড ছেড়ে চলে যায় তাকে আল্লাহর কাছে 'সিদ্দীক'বলে লেখা হয়। আর সে যখন মারা যায় তখণ আল্লাহ শহীদ হিসেবে তার রূহ কবজ করেন। একথা বলার পর নবী (সা) এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন৷
অধ্যাপক গোলাম আযমের চতুর্থ ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী তাঁর পিতাকে আল্লাহ যাতে শহীদ হিসাবে কবুল করেন এজন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। একজন মুসলমান নামাজ পড়ে না্মাজ কবুলের জন্য দোয়া করে। তেমনি একজন শহীদ ব্যক্তিরই শাহাদাত কবুলের জন্য দোয়া করা হয়। মহান আল্লাহ অধ্যাপক গোলাম আযমকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শহীদ হিসাবে কবুল করুন, আমীন
একদিন লেখিকা মাসুদা সুলতানা রুমী আপার বাসায় গেলে তার লেখা একটি পান্ডুলিপি চোখে পড়ে। নাম দিয়েছেন ''মরনের আগে ও পরে প্রিয়জনদের করনীয় । "
পান্ডুলিপি পড়তে পড়তে এক যায়গায় আটকে গেলাম। সেখানে অধ্যাপক গোলাম আযম স্যারের সাথে লেখিকার কথোপকথনের কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। লেখাটি এত পছন্দ হয়ে যায় যে, কমরেড মাহমুদ বইটির প্রকাশক হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ আছে লেখিকা গোলাম আযম সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন-
"জামাই, সরকার যেভাবে কথাবার্তা বলছে তাতে আপনাকে ছাড়বে বলে মনে হয়না....!!! "
উত্তরে আযম সাহেব বলেন-
এদেশের জনগনের গড় আয়ু ৫০-৬০ বছর। সেখানে আল্লাহ্‌ আমাকে ৮৫ বছর বয়সেও বাঁচিয়ে রেখেছেন। ইসলামী আন্দোলন করতে এসে সব সময় মনে শাহাদতের কামনা লালন করেছি। এই বয়সে এসে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা যদি আমাকে ভালবেসে আমাকে রহম করে শাহাদতের মর্যাদা দেয় এতে তোমরা পেরেশান হচ্ছো কেন? তোমাদের দোয়া করা উচিত মহান আল্লাহ্‌ আমাকে যেন এই মর্যাদা থেকে বঞ্চিত না করেন...!!"
আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন তার প্রিয় বান্দাকে এভাবেই মর্যাদাশীল করবেন কে বুঝতে পেরেছিল...!! সারা বিশ্বব্যাপী আজ শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে এই মহান নেতাকে হারিয়ে।। আল্লাহতালা নিজেই ঘোষনা করেছেন তিনি তার প্রিয় বান্দাদের মর্যাদা দান করেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান হিসাবে কবুল কিরে নিন। আমীন...
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'সর্বোত্তম জিহাদ হলো অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।' (মুসনাদ আহমদ : ৩/১৯) তিনি আরও বলেন, সর্বোত্তম শহীদ হলেন হামযা(রাঃ), অতপর ওই ব্যক্তি যে জালেম শাসকের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর সে তাকে সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে। ফলে তাকে(ঐ ব্যাক্তিকে) সে(জালেম শাসক) হত্যা করে। (হাকেম, মুস্তাদরাক: ৩/১৯০; জাসসাস, আহকামুল কুরআন : ১/৭০)

Shahadatur Rahman Sohel: 
অধ্যাপক গোলাম আজম মারা যাওয়ার পর সারা বিশ্বব্যাপী নানা দেশে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাতারের দোহাতে অবস্থিত সাইয়্যেদা আয়েশা মসজিদে শুক্রবার জুমুয়া নামাজের পর অধ্যাপক গোলাম আজমের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে । জানাজায় ইমামতি করেন বর্তমান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইসলামিক স্কলার হিসেবে পরিচিত আল্লামা ইউসুফ আল কারযাভী। সারা তুরস্ক জুড়ে ৮৮টি গায়েবানা জানাজা হয়েছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়েন সে দেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ। করাচিতে গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন পাকিস্তান জামায়াতের সাবেক আমির সৈয়দ মোনাওয়ার হোসেন। লাহোরে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়ান পাকিস্তান জামায়াতের আমির ডঃ মৌলানা সিরাজুল হক। তিনি অধ্যাপক গোলাম আজমকে শহীদ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। জানাজার সময় সিরাজুল হক বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযমের শাহাদাতে আমরা গর্ববোধ করি।    

(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)


এই লিংকটি ব্রাউজ করে প্রবন্ধটি পাঠ করুন প্লীজ: শাহাদাতের মর্যাদা 


জামায়াত লক্ষ্যপানে কতদূর অগ্রসর হয়েছে? অধ্যাপক গোলাম আজমের সাক্ষাৎকার


জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিসংখ্যা (১৯৯১সাল) সোনার বাংলা পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে আমীর জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আজমকে প্রশ্ন করা হয়: 
জামায়াত তার আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করেছে। পথহারা মুসলিম জাতিকে ইসলামের সুমহান লক্ষ্যপানে ধাবিত করাই জামায়াতে ইসলামীর বুনিয়াদি লক্ষ্য। খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শের আলোকে খেলাফত আলা মিনহাজিন্নাবুয়াত এই (নবীর তরীকা মোতাবেক খেলাফত) জামায়াত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জামায়াত সেই লক্ষ্যপানে কতদূর অগ্রসর হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

এর উত্তরে তিনি বলেন: আসল কথা হলো ইসলাম যে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এর দ্বারা রাজনীতি, অর্থনীতি তথা জীবনের সব সমস্যার সমাধান হতে পারে এ কনসেপ্ট মুসলিম সমাজ থেকে উবে গিয়েছিল।

বালাকোটের ময়দানে ইসলামী আন্দোলন ১৮৩১ সালে পরাজিত হবার পর সে আন্দোলন আর দানা বাধতে পারেনি। সাইয়েদ আহমদ শহীদের নেতৃত্বে সে আন্দোলন উপমহাদেশের উত্তর সীমান্ত প্রদেশ ও পাঞ্জাবের কিছু এলাকা নিয়ে একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করে। কিন্তু শিখ ও ইংরেজদের মিলিত ষড়যন্তের ফলে বালাকোটের ময়দানে পরাজয় ঘটে ইসলামের। এর ১০০ বছর পর প্রতিষ্ঠা লাভ করে জামায়াতে ইসলামী। এই পঞ্চাশ বছরে জামায়াতে ইসলামীর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে যে দলটির আন্দোলন ও সংগ্রামের ফলে ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান এই কনসেপ্টটি মুসলিম সামজে আবার প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। কয়েকশ বছর পর্যন্ত মুসলমানদের দিল-দেমাগ থেকে ইসলামের ধারণাই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু আলেম সমাজ ও মাদ্রাসাসমূহের ইহা এক বিরাট আবদান তারা কুরআন হাদীসকে সমাজের মাঝে জাগরূক রেখেছে। তাদের এ অবদান স্বীকার করতেই হবে।

কিন্তু কোরআন-হাদীরের জ্ঞান থাকার পরও আলেম সমাজ ইসলামকে একটি দ্বীন তথা জীবনাদর্শ হিসাবে তুলে ধরতে পারেনি। আমি বলব তাদের সামর্থ ছিল না। তাই তারা মুসলিমলীগ ও কংগ্রেস এ দুই ভাগে বিভক্ত ছিলেন। দেওবন্দী হবার পরও মাওলানা শাব্বির আহমদ ওসমানীর নেতৃত্বে ১০৪৩ সালে আলেমগন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম গঠন করেন যা পরবর্তীতে পাকিস্তান আন্দোলন সমর্থন দান করে।

মাওলানা মওদূদী এটা এক বিশেষ অবদান এমতো পরিস্থিতিতেও তিনি এমন এক আন্দোলন গড়ে তুলেন যা আজ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। ইউরোপ, আমেরিকা থেকে জাপান যেখানেই উপমহাদেশের মুসলমান রয়েছে সেখানেই এ আন্দোলন বিস্তার রয়েছে।

আজ আধুনিক শিক্ষিতদের মধ্যে একটি বড় দল তৈরী হয়ে গেছে যারা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে। অথচ আজ থেকে ৫০ বছর আগে এ অবস্থা ছিল না। এ আন্দোলন ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে লাখ লাখ নওজোয়ান নারী-পুরুষ-বৃদ্ধকে। মাদ্রাসার পাঠ চুকিয়ে যারা মনে করতেন দ্বীনের দায়িত্ব আঞ্জাম হয়ে গেছে বা যাবে এ আন্দোলন তাদের ধারনা পাল্টে দিয়েছে। ইকামাতের দ্বীনের কুরআনী জযবায় আলোড়িত করে তুলেছে ওলামা সমাজকে।

যে সমস্ত দলের তত্ত্বে ইসলাম নেই, তারাও আজ ইসলামের ঝান্ডা আর আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে নেমে এসেছে। নেজাম মানে বিধান নিয়ম নীতি রীতি। ১৯৫৩ সালে গঠিত হয় নেজামে ইসলাম। তাদের লক্ষ্য ইসলাম প্রতিষ্ঠা। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে খেলাফত আন্দোলন। ৪০ বছর পর্যন্ত রাজনীতিকে দ্বীনের অংশ মনে করতেন না হাফেজী হুজুর। তিনি ইসলাম কায়েমের জন্য ময়দানে নেমে আসেন জীবনের শেষ প্রান্তে। রাজনীতিকে বেছে নেনে পথ হিসাবে, যারা নাকি রাজনীতিকে দ্বীনের কাজই মনে করতেন না তাদেরকে এ আন্দোলনই শিখিয়েছে যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও দ্বীনের কাজ। আশির দশকে এ অঞ্চলে আরও একটি দল কায়েম হয়েছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে।

এভাবে আমি বলতে চাই-জামায়াতে ইসলামী এর লক্ষ্যে অনেক অগ্রসর হয়েছে এবং জামায়াতে এখন আল্লাহর রহমতে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে যে কেউ জামায়াতে করুক না নাই করুক এমনকি জামায়াতের বিরোধিতা করলেও কুরআনের আইনের কথা বলতে বাধ্য হচ্ছে।




Wednesday, July 19, 2017

দ্বীন ইসলাম হেফাজতের দায়িত্ব কাদের? পড়ুন ও ভিডিও দেখুন প্লীজ

রাছুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: “ইহ্ফাজিল্লাহা ইয়াহ্ফাজুকা” অর্থাৎ “আল্লাহর দ্বীনের হেফাজত কর, আল্লাহ তোমাকে হেফাজত করবেন” (মুসনাদে আহমদ, তিরমিযী, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত সহীহ হাদীস)। আল্লাহর দ্বীন তথা দ্বীন ইসলামের হেফাজতের দায়িত্ব প্রত্যেক মুসলমানের। এক্ষেত্রে হকপন্থী আলেম-ওলামা ও ইসলামী সংগঠনের অগ্রগামী ও নেতৃত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত। যদি মুসলমান এই দায়িত্ব পালন না করে তাহলে তারা আল্লাহ’র হেফাজত থেকে বঞ্চিত হবে। ফলে মুসলমান সমাজে পাপাচারের বিস্তৃতি, অপরাধী শক্তির প্রাধাণ্য, অন্য জাতির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা - পরাধীনতা, নির্যাতন ইত্যাদি ভয়াবহ আযাব-গযবের আবির্ভাব ঘটবে। 
এবিষয়ে এখানে একটি ভিডিও দেয়া হল - দেখুন ও শেয়ার করুন প্লীজ। মহান আল্লাহ এই ভিডিও-এর টকশোর মোঃ গোলাম মাওলা রণি ও মাহী বি. চৌধুরীসহ আমাদের সবাইকে দ্বীন ইসলামের সহি হেদায়াত দান করুন এবং দ্বীন ইসলামের হেফাজতের ও কায়েমের সংগ্রামে মজবুতভাবে এগিয়ে যাওয়ার তৌফিক করুন, আমীন।


(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)


Thursday, February 23, 2017

আপনি কি পূর্ণ এক রাত্রি ইবাদত করার সওয়াব পেতে চান?


বর্তমানে অনেক ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ফজরের নামাজে জামায়াতে হাজির হন না।   তাদের জন্য এই হাদিসটি প্রচার হওয়া জরুরী।  

Monday, February 20, 2017

ইসলামের বিধান কাদের জন্য? জবাবে আল্লামা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহঃ)


“এ বিধান [ইসলাম] ভীরু কাপুরূষের জন্য অবতীর্ণ হয়নি; নফসের দাস ও দুনিয়ার গোলামদের জন্য নাজ়িল হয়নি; বাতাসের বেগে উড়ে চলা খড়-কুটো, পানির স্রোতে ভেসে চলা কীট-পতঙ্গ এবং প্রতি রঙ্গে রঙ্গীন হওয়া রঙ্গীনদের জন্য একে অবতীর্ণ করা হয়নি। এ এমন দুঃসাহসী নর-শার্দুলদের জন্য অবতীর্ণ হয়েছে যারা বাতাসের গতি বদলে দেবার দৃঢ় ইচ্ছা পোষণ করে; যারা নদীর তরঙ্গের সাথে লড়তে এবং তার স্রোতধারা ঘুরিয়ে দেবার মতো সৎ-সাহস রাখে। যারা খোদার রঙকে দুনিয়ার সব রঙের চাইতে বেশী ভালবাসে এবং সে রঙ্গেই যারা গোটা দুনিয়াকে রাঙ্গিয়ে তুলবার দৃঢ় আগ্রহ পোষণ করে। যে ব্যক্তি মুসলমান তাকে নদীর স্রোতে ভেসে যাওয়ার জন্য পয়দা করা হয়নি। তার সৃষ্টির উদ্দেশ্যই হলো জীবন নদীকে তার ঈমান ও প্রত্যয় নির্দেশিত সোজা ও সরল পথে চালিত করা। যদি সেই সোজা পথ থেকে নদী তার স্রোত ফিরিয়ে নেয়, আর সেই পরিবর্তিত স্রোতধারায়ই কেউ ভেসে চলতে সম্মত হয়, তো এমন ব্যক্তির ইসলামের দাবী একেবারেই মিথ্যা। বস্তুত যে ব্যক্তি সাচ্চা মুসলমান, সে এই ভ্রান্তমূখী স্রোতের সাথে লড়াই করবে, তার গতি ঘুরিয়ে দেবার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগের চেষ্টা করবে – সাফল্য ও ব্যর্থতার কোন পরোয়াই সে করবেনা। এ লড়াইয়ের যে কোন সম্ভাব্য ক্ষতিই সে বরণ করে নেবে। এমনকি নদীর স্রোতের সাথে লড়াই করতে করতে তার বাহু যদি ভেঙ্গেও যায়, কিংবা শক্তি শিথিল হয়ে পড়ে এবং পানির তরঙ্গাঘাত তাকে আধমরা করে কোন তীরের দিকে ছুঁড়ে ফেলেও দেয়, তবুও তার আত্মা কখনো পরাজয় বরণ করবেনা। তার হৃদয়ে এই বাহ্যিক ব্যর্থতার জন্য এক মুহুর্তের তরেও কোন অনুতাপ জাগবেনা, কিংবা নদীর স্রোতে ভেসে চলা কাফির ও মুনাফিকদের সাফল্যের জন্য ঈর্ষার ভাবধারা প্রশ্রয় পাবেনা।” [সাইয়েদ আবুল ‘আলা আল-মওদূদী, ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্ব (৫ম সংস্করণ, ১৯৯৩), পৃঃ ২০৩-২০৪, শতদল প্রকাশনী, ঢাকা। 

Popular Posts