Saturday, December 31, 2016

অধ্যাপক গোলাম আযমের ফর্মুলায় নোবেল বিজয় - মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত

মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রাক্তন সভাপতি,  প্রাক্তন নির্বাহী সম্পাদক, মাসিক ছাত্রসংবাদ।   তার ওয়েবসাইট: https://yasinarafath.com। ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন - (www.facebook.com/ira.rdv/ ) পেইজে ১৪ই অক্টোবর, ২০১৫ তারিখে উক্ত শিরোনামে তার একটি প্রবন্ধ পোষ্ট করা হয়। এই পোষ্টটি নীচে দেয়া হলো:
        এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ায় গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তাকারী নাগরিক সমাজের চারটি সংগঠন। ২০১১ সালে তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসন বিরোধী গণবিপ্লবের পর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার জন্য এই চার সংগঠনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। শান্তির মুকুটজয়ী নাগরিক সমাজের এ সংগঠনগুলো একত্রে ‘ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট’ নামে পরিচিত। পুরস্কৃত সংগঠন চারটি হচ্ছে তিউনিসিয়ান জেনারেল লেবার ইউনিয়ন(ইউজিটিটি), তিউনিসিয়ান এমপ্লয়ার্স ইউনিয়ন(ইউটিআইসিএ), তিউনিসিয়ান হিউম্যান রাইটস লিগ (এলটিডিএইচ) ও তিউনিসিয়ান অর্ডার অব লইয়ার্স। তিউনিসিয়ায় নাজুক ঐ পরিস্থিতিতে দেশটিকে সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের হাত থেকে বাঁচাতে অধ্যাপক গোলাম আযমের ফর্মুলা “কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি" প্রতিষ্ঠা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই চারটি সংগঠন বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করে।
       পুলিশি হয়রানি ও বেকারত্বের প্রতিবাদে একতরুণের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মাহুতির ঘটনার জের ধরে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিউনিসিয়ায় অস্থিরতা দেখা দেয়। শুরু হয় একনায়ক জাইন আল আবেদিন বেন আলীর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ। গণতন্ত্রকামী মানুষের টানা আন্দোলনের ফলে ওই বছরই পদত্যাগে বাধ্যহন ১৯৮৭ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা বেন আলী।
        বেন আলীর পতনের পর গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার জন্য উন্মুখ তিউনিসিয়ায় বড় ধাক্কা আসে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে। তখন বিরোধীদলীয় এক নেতা অস্ত্রধারীদের গুলিতেনিহত হন। ছয় মাসের মধ্যে সেটি ছিল তিউনিসিয়ায় দ্বিতীয় রাজনৈতিক হত্যা। এতে ২০১১-এর অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী দল এন্নাহদার নেতৃত্বাধীন জোটের পদত্যাগ দাবি করে বিরোধীরা।
           এরপর শুরু হয় ব্যাপক সহিংসতা ও বিক্ষোভ। এমন পরিস্থিতিতে বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা গড়ায় নেতৃত্ব দেয় নাগরিক নেতাদের ওই চার সংগঠন। সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করে প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। নতুন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত নির্বাচিত পার্লামেন্টকে কাজ করে যেতে দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয় সকল রাজনৈতিক দল। নতুন সংবিধান রচনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৪-এর জানুয়ারিতে পদত্যাগ করে এন্নাহদা সরকার।এরপর সে বছরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ নির্বাচন। তত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচন তিউনিসিয়ার গণতন্ত্রে উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে ভুমিকা রাখে।
      উল্লেখ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার এ চমৎকার পদ্ধতি ৮০’র দশকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম। তিনি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে জামায়াত আয়োজিত এক জনসভায় এ ফর্মুলা পেশ করেন।
(দ্রষ্টব্য: অধ্যাপক গোলাম আজমের পক্ষ থেকে আব্বাস আলী খান বাইতুল মোকাররমের ঐ জনসভায় কেয়ারটেকার সরকারের ফর্মুলা উপস্থাপন করেন।)

See this video: 



Thursday, December 8, 2016

সালাতে মন স্থির রাখার কতিপয় উপায়

সালাতে মন স্থির রাখার কতিপয় উপায়:
১) সালাতের প্রস্তুতি নিয়ে শান্ত মনে আগেভাগে মসজিদে আসা।

২) সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ করা।

আনাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ”সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ কর। কেননা, মানুষ যখন সালাতে মৃত্যুর কথা স্মরণ করে তখন সে তার সালাতকে সুন্দর ভাবে আদায় করতে সক্ষম হয়। ” (সনদ হাসান, সিলসিলা সহীহাহ/২৮৩৯)
৩) “আমি আল্লাহকে দেখছি বা তিনি আমাকে দেখছেন” এই অনুভূতি মনে জাগ্রত রাখা।
৪) এ কথা স্মরণ করা যে, আল্লাহ তায়ালা সালাতে বান্দার প্রতি উত্তর করে থাকেন।
৫) এ কথা স্মরণ রাখা যে, সালাতে মূলত: আল্লাহর সাথে চুপিসারে কথা বলা হয়।
৬) সালাতে পঠিত দুয়া-তাসবীহ ও সূরা-কিরাতের অর্থ অনুধাবন করা।
৭) খাবার উপস্থিত রেখে বা পেশা-পায়খানা চেপে সালাত আদায় না করা। কেননা, এতে মনোযোগ বিঘ্নিত হয়।
৮) সেজদায় বেশী বেশী আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা।

রাসূল সা. বলেছন, বান্দা যখন সিজদায় থাকে তখন সে আল্লাহর সব চেয়ে সন্নিকটে থাকে। অত:এব, তোমরা (সিজদা অবস্থায়) অধিক পরিমানে দুয়া কর।” (সহীহ মুসলিম) , তবে একাকী সালাত, নফল, সুন্নত, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিজদায় অধিক পরিমাণে দুয়া করা ভালো। কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত দুয়া সমূহ অধিক হারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে।

৯) হাই আসলে মুখে হাত দিয়ে যথা সম্ভব তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা।
১০) সিজদার স্থানে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা এবং অন্য দিকে দৃষ্টিপাত না করা।
১১) ভয়-ভীতি ও ধীর স্থিরতা সহকারে সালাত আদায় করা।
১২) শয়তানের উপস্থিতি টের পেলে চুপি স্বরে আউযুবিল্লাহ.. পাঠ করা ও বাম দিকে অতি হালকা ভাবে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করা।

আমর ইবনুল আস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম: হে আল্লাহর রাসূল, শয়তান আমার সালাত ও কেরাআতে বিঘ্ন সৃষ্টি করে দেয়। তিনি বললেন: এটি হল শয়তান। যার নাম খিনযাব। তুমি যদি এমনটি অনুভব কর, তবে “আউযু বিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম পাঠ কর এবং তোমার বাম পাশে তিনবার হালকা ভাবে থুথু নিক্ষেপ কর।” তিনি বলেন, আমি এমনটি করায় আল্লাহ তায়ালা আমার এ সমস্যা দূর করে দিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম)

উল্লেখ্য যে, শরীর বা কাঁধ বাম দিকে ঘুরার প্রয়োজন নাই। কেবল মাথাটা সামান্য বাম দিকে নিয়ে খুব হালকা ভাবে থুথু ফেলার মত করবে। (এতে মুখ থেকে পানি নির্গত হবে না।) এমনটি করলে শয়তান লাঞ্ছিত অবস্থায় পলায়ন করবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন।

Popular Posts