Tuesday, April 10, 2018

আফগানিস্তানে সোভিয়েত রাশিয়া বিরোধী জিহাদ, তা*লে*বান এবং জামায়াতে ইসলামী

-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল


আমরা জানি আফগান মুজাহিদ সংগঠনগুলো বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী দীর্ঘ জিহাদের মাধ্যমে সোভিয়েত রাশিয়া পরাশক্তিকে আফগানিস্তানের মাটিতে পরাজিত করেছে। এই পরাজয়ই সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাংগনকে তরান্বিত করেছে। যার ফলে শধ্য এশিয়া ছয়টি মুসলিম রাষ্ট্রের স্বাধীন অভ্যুদয় সম্ভব হয়েছে। আফগানিস্তানের মুজাহিদ সংগঠনগুলোর  মধ্যে সবচেয়ে বড় দু'টি সংগঠন ছিল - (ক) হেজবে ইসলামী এবং (খ) জমিয়তে ইসলামী। এর মধ্যে জমিয়তে ইসলামী গড়ে তুলেছেন প্রফেসর বোরহানুদ্দীন রাব্বানী। তিনি এই সংগঠন গেড় তুলেছেন জামায়াতে ইসলামী রচিত বিপ্লবী ইসলামী সাহিত্য দ্বারা উজ্জীবিত হয়ে। আর সবচেয়ে বড় মুজাহিদ সংগঠন, আফগান জিহাদের সর্বাধিক ভূমিকা পালনকারী, পশতুনদের সংগঠন এবং গুলবুদ্দীন হেকমতিয়ারের নেতৃত্বাধীন হেজবে ইসলামী জামায়াতে ইসলামীরই তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মুজাহিদ সংগঠন ছিল। পরবর্তীকালে তাদের কোন ভুলত্রুটি থাকলে ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের জিহাদের গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা অনস্বীকার্য ঐতিহাসিক সত্য। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগান জিহাদে বিজয়ে ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর অবদানই অবশ্যই অগ্রগামী। এখানে সাইয়েদ মুজতাবা হুসাইনের একটি উক্তি উল্লেখ্য: ‍‘‘বর্তমানে আফগানিস্তানে ইসলামী বিপ্লবের জন্য রুশের ন্যায় শক্তির বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম চলছে তা মওলানা মওদূদী রহ: ইসলামী তাবলীগের ফলশ্রুতি” (দৈনিক জাসারাত, সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টিতে জামায়াতে ইসলামী ও মাওলানা মওদূদী, সংগ্রহে: সাইয়েদ রাফে সামনান)

               রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগান জিহাদের পরবর্তীকালে উক্ত জিহাদকারী মুজাহিদ সংগঠনগুলোর ব্যর্থতার পটভূমিতে গড়ে উঠা তালেবান আন্দোলনে সাবেক হেজবে ইসলামীর বেশীর ভাগ মুজাহিদ কমান্ডার ও মুজাহিদ সৈনিকরা রয়েছেন। তারা জামায়াতে ইসলামীর তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছেন। তালেবান হচ্ছে পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের দ্বারা প্রভাবিত সংগঠন। এই জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম দীর্ঘ বহু বৎসর যাবৎ জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের সাথে জোটভুক্ত আছে। অনলাইন মুক্ত বিশ্বকোষ wikipedia.org-তে বলা হয়েছে:  আদর্শিক প্রভাবক: তালেবানের ধর্মীয়/রাজনৈতিক দর্শন, বিশেষ করে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তার প্রথম শাসনামলে, প্রধান মুফতি রশিদ আহমদ লুধিয়ানভি এবং তার কাজ দ্বারা ব্যাপকভাবে উপদেশ ও প্রভাবিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনের পরিচালিত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নীতিগুলি অবশ্য আবুল আ'লা মওদুদী ও জামায়াত-ই-ইসলামী আন্দোলনের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছিল

                তালেবান নেতা আব্দুল হাকিম মুজাহিদ ১৯৯৮ সালে আগষ্ট নয়াদিল্লীর দাওয়াত পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়। ‘‘কিন্তু হেকমাতিয়ারের বিরুদ্ধে জিহাদী পদক্ষেপের দরুন আপনাদের অন্তরে কি কেবল কোমল অনুভূতি সৃষ্টি হতে পারে না? এ প্রশ্নের জবাবে উক্ত তালেবানের নেতা বলেন: ওদের সংগে আমাদের কিসের বিবাদ?........আমরা আফগানিস্তানে শরীয়ত চালু করেছি। রাব্বানী-হেমতিয়ার-মাসুদ আমাদের সহযোগিতা করুন, আমরা ওদেরকে বুকে তুলে নেবো” ( দৈনিক সংগ্রাম, ৩০শে অক্টোবর ১৯৯৮ইং)।

                আফগানিস্তানের তালেবানদের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদী আন্তর্জাতিক সংবাদে মাধ্যমগুলো জোরালো অপপ্রচার রয়েছে। এ প্রসঙ্গে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক হলেও সামগ্রিক প্রয়োজনে উক্ত তালেবান নেতার নারী শিক্ষার বিষয়ে একটি বক্তব্য উল্লেখ্য: ‘‘আমরা নবী করিম সা: এর এই বাণীকে উপেক্ষা  করতে পারি করে যাতে বলা হয়েছে শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজ বা আবশ্যক। আমি তো আগোই বলেছি, আফগানিস্তানে এখন মেয়েদের শিক্ষা অর্জন ও চাকরী গ্রহণের অধিকার রয়েছে কিন্তু সীমা ও শর্তের মধ্যে। আমাদের কাছে আসলে কি চাওয়া হচ্ছে? আমর কি হেজা বিরোধিতার সূত্রপাত ঘটাব? এমনটা কেমন করে সম্ভব? (সূত্র পূর্বোক্ত) উক্ত তালেবান নেতার অপর একটি বক্তব্য এখানে উল্লেখ্য যে: ‘‘মক্কা বিজয়ের পর নবী করিম (সা:) কাবাঘরে গমন করেন এবং মকামে ইব্রাহীম এর আসল ভিত্তি ঠিক রেখে মুশরিকদের নির্মিত বাহুল্য ও সীমালংঘিত অংশগুলোকে অপসারনের ব্যাপারে বিবেচনা করেন। অতএব তিনি আপন সিদ্ধান্ত বদলে দেন এবং বাড়ী ফিরে উম্মৎ জননী হযরত আয়েশা (রা:) কে সম্বোধন করে বলেন,  হে হুমাইরাহ! আমি চাই মাকামে ইব্রাহীমকে কায়েম রেখে গোটা কাবাঘর পূণর্নির্মান করতে, কিন্তু আমার আশংকা হচ্ছে, এমন করলে লোকেরা অসন্তোষ ছড়াবে। এঘটনা থেকে আপনি অনুমান করতে পারেন যে, ইসলাম প্রাচীন ঐতিহ্য বা সংস্কারকে শ্রদ্ধা জানায় এবং সে মানব সমাজের ধ্যান-ধারনাকে সামনে রেখে তাদের প্রতি মনোযোগ দেয় (সুত্র: পূর্বোক্ত)। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ছোটখাট ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিয়েও যারা বিবাদ বা বিতর্ক সৃষ্টি করে এমন বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের জন্য উক্ত তালেবান নেতার উদার বক্তব্য অবশ্যই শিক্ষণীয়।

                  এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের  নাইন - ইলেভেন-এর পর ন্যাটো জোটের সহায়তায় আফগানিস্তানে আমেরিকার আগ্রাসনের সময় গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার তালেবানকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তার অনুগত হেজবে ইসলামীর মুজাহিদদেরকে তালেবানের সহায়তায় যুদ্ধের আহ্বান জানান। পরে আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের পতন হয়। এরপর তালেবানরা আমেরিকা সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদ অব্যাহত রাখে। এদিকে ইসলামপন্থী নেতা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার বেশ কয়েক  মাস ধরে আলোচনা শেষে প্রায় ২০ বছর পর ২০১৭ সালে কাবুলে ফিরেন গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার। এখানে উল্লেখ্য, তালেবানদের মতই গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার একই পশতুন গোষ্ঠীতুক্ত। পশতুনরা আফগানিস্তানের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। 

পূর্ববর্তী তালেবান সরকারের প্রতি 
বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন
            বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, মোমতাজুল মোহাদ্দেসীন মাওলানা আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ পূর্ববর্তী তালেবান শাসনাধীন আফগানিস্তান সফরের  বর্ণনা দিতে যেয়ে বলেন: “আমরা প্রবেশ পথ দিয়ে আফগানিস্তানের উপজাতীয় এলাকায় প্রবেশ করে আফগানিস্তানস্থ সীমান্তের কাস্টমস অফিস থেকে যাবতীয় অনুস্ঠানাদি সেরে সোজা আফগানিস্তানের দ্বিতীয় রাজধানী জালালাবাদের দিকে রওয়ানা হই। রাত আটটা নাগাদ জালালাবাদ উপস্থিত হয়ে প্রটোকল অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাদেরকে সরকারী গেস্ট হাউসে পৌছিয়ে দেন। এখানেই আমাদের থাকার ও খানাপিনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমরা এশার নামায আদায় করে রাতের খানা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আমি জালালাবাদ পৌঁছেই প্রটোকল অফিসারের কাছে কাবুল যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করি। তিনি বললেন, জালালাবাদ হতে সপ্তাহে মাত্র ১ দিন বিমান সার্ভিস চালু আছে। সুতরাং ৫/৬ দিনের আগে আপনি কোন বিমান পাচ্ছেন না। একথা শুনে আমি কাবুল সফরের পরিকল্পনা বাদ দেই এবং জালালাবাদের গভর্ণেরর সাথে আমার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার জন্য তাকে অনুরোধ করি। ডেপুটি গভর্ণরের সাক্ষাৎ: পরের দিন ভোরে নামায, পায়চারী ও গোসল শেষ করে নাস্তা করে নেই। নাস্তার সময় প্রটোকল অফিসরা খবর দেন যে, আজই অর্থাৎ ২রা নভেম্বর বেলা ১১টায় গভর্ণর হাউসে ডেপুটি গভর্ণর জনাব মোল্লা সাদরে আমল আমাকে সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন। কেননা গভর্ণর ঐদিন জালালাবাদে ছিলেন না। আমি আমার সাথী সীমান্ত প্রদেশের আমীর এডভোকেট ইব্রাহীম সাহেবকে নিয়ে ১১টা বাজার সামান্য পূর্বে গভর্ণর হাউজে হাজির হই। ওয়েটিং রুমে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পরেই ডেপুটি গভর্ণর আমাদেরকে সাক্ষাৎকার দেন। পারস্পরিক সালাম, মোসাফাহা, কোলাকুলি ও কুশল বিনিময়ের পরে ডেপুটি গভর্নরের সাথে আমার আলোচনা শুরু হয়। আমি আমীরে জামায়াতে জনাব গোলাম আযম সাহেব ও জামায়াত নেতৃবৃন্দের সালাম তাকে পৌঁছাই এবং অনুরোধ করি তিনি যেন আমার এবং আমীরে জামায়াতের সালাম আফগানিস্তানের আমীরুল মোমেনীন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর আল মুজাহিদকে পৌঁছান। আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর এ পরিচয় তার কাছে থাকলেও ১৯৬২ সনের পাক পার্লামেন্টে আমি ও সীমান্ত প্রদেশের মুফতি মাহমুদ এক সঙ্গে সদস্য ছিলাম একথা তাকে অবহিত করি। আফগানিস্তানে মুফতি মাহমুদ এক সর্বজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব। তিনি এক সময় সীমান্ত প্রদেশের চীফ মিনিস্টারও ছিলেন। ১৯৮৯ সনে আফগানিস্তান থেকে রাশিয়ার বের হয়ে যাওয়ার পর মুজহেদীনদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি যুদ্ধে আমরা যে খুবই মর্মাহত ছিলাম একথা তাকে বলি। অত:পর বর্তমান তালেবান সরকার কাবুলসহ দেশের প্রায় ৯৫% ভাগ ভূ-ভাগ দখল করে দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা বহাল করায় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ তালেবান সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন দান করেছে সে কথাও তাকে অবহিত করি। আমি আরবী ভাষায় তার সাথে কথা বলছিলাম এবং তিনি আমার কথা বুঝতে ছিলেন।  অত:পর তিনি কথা শুরু করেন। তিনি প্রথমেই বলেন যে, অবশ্যই জামায়াতে ইসলাামী আফগান জিহাদে দেশকে রুশ কবল মুক্ত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে আমাদের বিশ্বাস জামায়াতের এই ভূমিকা কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির জন্য ছিল না। ছিল নীতি ও আদর্শের জন্য ।  তালেবান সরকার গৃহযুদ্ধের অবসান করে ঐ নীতি ও আদর্শ অর্থাৎ শরিয়তের আইন সারাদেশে চালু করেছে যার জন্য জামায়াতে ইসলামীসহ দুনিয়ার ইসলামী আন্দোলনসমূহ আফগান জিহাদে সাহায্য ও সমর্থন দিয়েছিল(`আফগানিস্তানে যা দেখেছিগ্রন্থ)

                   ইতিপূর্বে উল্লেখিত তালেবানদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আমেরিকার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সমঝোতাকারী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তুর্কি প্রতিনিধিদল। আর বর্তমান তুরস্ক সম্পর্কে অন্যত্র বলা হয়েছে।  আর তালেবানদের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের কেন্দ্র কাতার।  কাতার হলো বর্তমানে জামায়াত-ইখওয়ানীদের সমাবেশস্থল। এখানে একটি কথা উল্লেখ্য যে, প্রথম তালেবান নেতা মোল্লা ওমর আল্লামা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদীকে উস্তাদ সম্মোধন করতেন। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে আফগান ও পাকিস্তান তালেবান তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। 

Edited time: july-2020


আফগানিস্তানে তালিবান বিজয়ের পর নীচের অংশটুকু এড করলাম:

আমি ২০২১ সালের ১৬ই আগষ্ট এই পোস্টটি ফেইসবুকের অনেক ইসলামী গ্রুপে শেয়ার করি। এরপর বিভিন্নজনে বিভিন্ন মন্তব্য করে, সেসবের জবাবও দিয়েছি । সেসব পরে দিচ্ছি। এখন পাকিস্তান জামায়াতের আমির মৌলানা সিরাজুল হক--এর প্রতিক্রিয়া এখানে দিচ্ছি। 

পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর আমীর সিরাজুল হক বলেছেন: 
Jamaat-e-Islami Ameer Sirajul Haq has said the "peaceful taking over" of Kabul by Taliban insurgents was actually a defeat of the US and a victory of Afghan people and the Islamic world.
It is hoped that after the humiliating defeat, the US would not invade any more countries, he was quoted as saying by The News International while addressing the central training workshop for the JI leaders and workers at Mansoorah here.
He lauded the Taliban for declaring peace, non-retaliation against opponents, protection of diplomats and foreigners, and amnesty for rivals which, he said, was unprecedented in the modern civilized world.
Siraj was quoted as saying by the newspaper that the defeat of the Western colonist powers for the third time in history by Afghanistan has further strengthened the dream of the liberation of Kashmir and Palestine, hoping that the day was not far when the sun of freedom would rise there.
অর্থাৎ: জামায়াতে ইসলামীর আমীর সিরাজুল হক বলেছেন, তালেবান বিদ্রোহীদের দ্বারা কাবুলের "শান্তিপূর্ণ দখল" আসলে আমেরিকার পরাজয় আর আফগান জনগণ এবং ইসলামী বিশ্বের জয়। আশা করা যায় যে, লজ্জাজনক পরাজয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো দেশে আক্রমণ করবে না। তিনি এখানে মনসুরায় জেআই নেতা ও কর্মীদের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভাষণ দেওয়ার সময় বলেছিলেন।
তিনি শান্তি ঘোষণা, বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ না নেওয়া, কূটনীতিক এবং বিদেশীদের সুরক্ষা এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার জন্য তালেবানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এটা আধুনিক সভ্য বিশ্বে নজিরবিহীন।
আমীর সিরাজুল হক সংবাদপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, আফগানিস্তানের কাছে ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমা উপনিবেশিক শক্তির পরাজয় কাশ্মীর ও ফিলিস্তিনের মুক্তির স্বপ্নকে আরও শক্তিশালী করেছে, আশা করে যে সেদিন বেশি দূরে নয় যখন স্বাধীনতার সূর্য উঠবে সেখানে। 
Source: www.indiablooms.com

এই পোস্টটি ফেইসবুকের অনেক ইসলামী গ্রুপে শেয়ার করার পর একটি গ্রুপে একজন কমেন্ট করে বলেন: সোভিয়েত হঠাও এর পরবর্তী ইতিহাসে জমিয়তে ইসলামী খারাপ পথ বেছে নিয়েছিল। এর পরিণতিতে আহমাদ শাহ মাসুদ এবং রব্বানী দুইজনকেই জীবন দিতে হয়েছে। এর জবাবে আমি জানাই: “গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের হেজবে ইসলামীর সাথেই জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক । সে সম্পর্কে এই পোস্টে লেখা হয়েছে।” নামের সাদৃশ্যের বা অন্য কোন কারণে অনেকের এই বিষয়ে ভুল ধারনা আছে। জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কযুক্ত গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের হেজবে ইসলামী আমেরিকাবিরোধী জিহাদে তালেবানের পক্ষে ছিল। আরো উল্লেখ্য যে, গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার বর্তমান বিজয়ী তালেবান সরকারে অন্যতম মুখ্য সমন্বয়ক হিসাবে অংশ নিয়েছেন।
গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের ইমামতিতে নামাজরত তালেবান নেতৃবৃন্দ

গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজল হকের সাথে সাক্ষাতের ভিডিও:

আরেকজন পোস্টের শেষে আমার এই বক্তব্যের রেফারেন্স চেয়েছেন - "জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে আফগান ও পাকিস্তান তালেবান তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল।" আমি একটা লিংক দিয়েছি। তারা আসলে মৌখিক তীব্র প্রতিবাদের চেয়ে বেশী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। যে কেউ Bangladesh mission under Taliban threat - এই লংটেইল কীওয়ার্ড দিয়ে গুগুলে সার্চ করে দেখতে পারেন। ২০১৩ সালের অনেকগুলো লিংকে এসম্পর্কে জানতে পারবেন। আমি আরো জানাই - আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ হলে পাকিস্তান পার্লামেন্টসহ বিশ্বের বহু দেশের বহু ইসলামী সংগঠনই প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এর মধ্যে সর্বাধিক শক্ত প্রতিবাদ যারা জানিয়েছিল তাদের মধ্যে বর্তমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অন্যতম। আমি এই লিংকটা শেয়ার করেছি: Resolution passed: Abdul Quader Molla was innocent, Imran Khan claims

বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলার, শায়খ আল্লামা ডঃ ইউসুফ আল কারযাভী (হাফিঃ) -এর সাথে কাতারে তালেবান নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ।

নীচে একজন তালেবান নেতার বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে সাক্ষাৎকার দেয়া হয়েছে। এটা তালেবান বিজয়ের আগের। তিনি সাতক্ষীয়া জেলায় জামায়াতের উপরে ভয়ংকর নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করেন। 
(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)

বিঃদ্রঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনুসারে দাওয়াত, সংগঠন ও ইসলামের আলোকে গঠন এবং মানবসেবার মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম (জিহাদ) অব্যাহত রেখেছে। মূলতঃ আফগান, ইরান, তুরান কেউই ইসলামের মডেল নয়, কোরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে নিজ দেশের অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে হবে।

Please browse these links:




সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ’র। মহান আল্লাহ অধিকতর সাফল্য অর্জনের তৌফিক দান করুন, আমিন

No comments:

Post a Comment

Popular Posts