Showing posts with label Bangladesh Jamaat-e-Islami. Show all posts
Showing posts with label Bangladesh Jamaat-e-Islami. Show all posts

Thursday, January 17, 2019

সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.) ও জামায়াতে ইসলামী

- কাজী হোসাইন আহমদ
[সাবেক আমীর, জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান]

মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.) ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ সালে ভারতের হায়দরাবাদ দাক্ষিণাত্যের শহর আওরঙ্গাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নিজ জীবনকালের এক মহান ব্যক্তিত্ব। তার অন্তর ছিল আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের যথার্থ ভালবাসা, মুসলিম উম্মাহর দরদ এবং গোটা মানবজাতির কল্যাণকামিতার চেতনায় পরিপূর্ণ। মাওলানা মওদূদী (রহ.) তার রচিত বহুমূখী জ্ঞানে সমৃদ্ধ গ্রন্থাবী ছাড়াও যেই মহামূল্যবান ‘উত্তরাধিকার' সম্পদ এ পৃথিবীতে রেখে গেছেন, তা হচ্ছে তারই প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘জামায়াতে ইসলামী'।
২৬ আগস্ট ১৯৪১ সাল। পাক-ভারত বাংলা তথা গোটা হিমালয়ান উপমহাদেশের কিছু বিশিষ্ট লোক, যারা আগে থেকেই মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.)-এর অতীব জ্ঞানগর্ভ লেখায় প্রভাবিত ছিলেন এবং তার সম্পাদনাধীন মাসিক ‘তারজুমানুল কুরআন'-এর মাধ্যমে তার চিন্তাধারা, দৃষ্টিভঙ্গি  এ ব্যক্তিত্বের চারিত্রিক গুণাবলী সম্পর্কে ছিলেন পূর্ণ অবহিত, তারই আহবানে তারা লাহোরে সমবেত হন। ঐ সভাতেই ‘জামায়াতে ইসলামী' নামক একটি ছোট্ট সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েক বছর ধরে মওলানা মওদূদীর ব্যক্তিগত বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্বেই দলটি চলতে থাকে।
তখন খোদ বিশ্বকবি আল্লামা ইকবালের পরামর্শ ও এই সংগঠনের চালিকা শক্তিরূপে কাজ করে। মওলানা মওদূদী (রহ.) এবং কবি আল্লামা ইকবালের মধ্যে কি গভীর সম্পর্ক ছিল এ থেকেই তা অনুমেয় যে, জামায়াতে ইসলামীর প্রথম কেন্দ্রটি পূর্ব পাঞ্জাবের পাঠানকোট সংলগ্ন ‘দারুল ইসলাম' নামক একটি বস্তি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। মওলানা মওদূদীই জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিসের জন্যে দারুল ইসলামকে বেছে নেন। দারুল ইসলামের এ ভূমিটি ছিল পাঞ্জাবের জনৈক জমিদার মরহুম চৌধুরী নিয়াজ আলীর তিনি আল্লামা ইকবালকে এই লক্ষ্যে কমিটি প্রদান করেছিলেন, যেন কবি ইসলামী কর্মকান্ডের প্রধান কেন্দ্র হিসাবে তা ব্যবহার করেন। আল্লামা ইকবাল মাওলানা মওদূদীকে (রহ.) এই মর্মে আহবান জানালেন, তিনি যেন এখানে একটি ইসলামী কেন্দ্র স্থাপন করেন। ব্যাপারটি এক ঐতিহাসিক বাস্তবতা, যা কারোর অস্বীকার করার উপায় নেই। শুধু তাই নয়, এ ঐতিহাসিক বাস্তবতা দ্বারা ঐ সকল অভিযোগের অসারতা প্রমাণ হয়ে যায়, যা মাওলানা মওদূদী সম্পর্কে পাকিস্তান সৃষ্টির প্রশ্নে বিরোধিতার অন্যায় অভিযোগ তোলা হয়েছিল। পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টা আল্লামা ইকবাল (রহ.) নিজেই গোটা হিমালয়ান উপমহাদেশে মাওলানা মওদূদীকে (রহ.) এরূপ যোগ্য মনে করেছেন যে, তিনিই উক্ত দারুল ইসলামে ইসলামী প্রচার কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপনের যোগ্য ব্যক্তিত্ব। যেখান থেকে উপমহাদেশের মুসলমানরা সার্থক নেতৃত্ব পেতে পারে।
জামায়াতে ইসলামী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা কেন হয়েছিল? এর কী প্রয়োজন ছিল? যেখানে ঐ সময় আগে থেকেই মুসলিম লীগ এবং মুসলমানদের অন্যান্য দল বিদ্যমান ছিল? মাওলানা সায়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.) এমন কোন ব্যক্তি ছিলেন না যে, শুধু একটি আনুসাঙ্গিক দল সৃষ্টির জন্যে অথবা নিজ নেতৃত্বের জৌলূস দেখাবার উদ্দেশ্যে কোন নতুন দল গঠনের তার প্রয়োজন ছিল। তিনি তার মাসিক গবেষণাধর্মী ম্যাগাজিন ‘তার জুমামুল কোরআন'-এ বিস্তারিতভাবে সেসব কারণ বর্ণনা করেছিলেন যার ফলে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন। মূলত যেই লক্ষ্যণীয় আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সাঃ) নিজ সাহাবীদের সমন্বয়ে সংগঠিত হয়েছিলেন, সেই লক্ষ্য হাসিলের উপযোগী ও সেই কর্মপদ্ধতির অনুসরণের জন্যেই তিনি একটি নতুন দলের চিন্তা করেন। তারই মহানবীর নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছেন মানব ইতিহাসের এক সর্বাত্মক বিপ্লব মানবের সার্বিক কল্যাণের দিক যার সাথে পৃথিবীতে সংঘটিত আর কোনো বিপ্লবেরই তুলনা চলে না।
কোরআন ও হাদীসে বর্ণিত উদ্দেশ্য লক্ষ্য অর্জনের জন্য তখন মহানবী (সঃ) কর্তৃক মনোনীত কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী কাজ করার জন্য একটি দলের প্রয়োজন ছিল। হাদীস শরীফে রয়েছে যে, শেষ যুগেও মুসলিম উম্মাহর সংশোধন ঐ কর্মপদ্ধতিতেই হবে, ইসলামের শুরুতে যেই পদ্ধতিতে এই জাতির সংশোধনের সূচনা হয়েছিল। মহানবী (সঃ) যেসব সুমহান লক্ষ্যে এবং যেই কর্মপদ্ধতির ভিত্তিতে মুসলিম দল গঠন করেছিলেন আজও সেই উদ্দেশ্য লক্ষ্য অর্জন এবং এই জাতির সংশোধন সেই কর্মপদ্ধতিতেই সম্ভব-- অন্য কোনো কর্মপদ্ধতিতে নয়। আল্লাহ এবং তার রাসূল (সঃ) মুসলিম জাতির যেই দায়িত্ব কর্তব্য বর্ণনা করেছেন এই জন্যে এই জাতিকে পুনর্বার সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করা অপরিহার্য। আর এই জন্যে প্রয়োজন একটি সুসংগঠিত দলের মূলত মাওলানা মওদূদী (রঃ) জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা করার আগে কুরআন  ও সুন্নাহর আলোকে তারই ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছিলেন একথাটি স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন যে, মাওলানা মওদূদী (রঃ) নিজের পক্ষ থেকে নতুন কোন ফেকাহ্ প্রদান করেননি, বরং কোরণ ও সুন্নাহর নির্দেশনার অধীনই মুসলিম জাতিকে এক সুমহান লক্ষ্যের অভীশারী করতে সচেষ্টা হয়েছেন।
গোটা হিমালয়ান উপমহাদেশ থেকে প্রথমে মাত্র ৭০/৭২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি সমবেত হয়েছিলেন। তাদের সকলেই তেমন বড় মাপের আলেম ছিলেন না। তবে তাদের মধ্যে এমন কয়েক জন দক্ষ ইসলামী জ্ঞান বিশেষজ্ঞ আলেম ছিলেন যারা ইল্ম ও তাকওয়ার দিক থেকে ছিলেন শীর্ষস্থানীয়। এদের মধ্যে ছিলেন কতিপয় যোগ্য ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি। আর ছিলেন প্রচুর সাধারণ শিক্ষিত লোক। তাঁরা মাওলানা মওদূদীর লেখায় প্রভাবিত হয়ে এই জামায়াতে শরীক হয়েছিলেন কিন্তু স্বল্পসংখ্যক এই কতিপয় লোক যারা ছিলেন  দরিদ্র, অতি সামান্য মূলধন হাতে নিয়ে একটি নতুন দলের ভিত্তি স্থাপন করলেন। তারা নিজেদের পক্ষ থেকে এই দলটির জন্য কোনো আকীদা বিশ্বাস ও লক্ষ্য উদ্দেশ্য পেশ করেননি। বরং কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে দলটির আকীদা-বিশ্বাস ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ধারণ করেন, যা জামায়াতে ইসলামী গঠনতন্ত্রে পূর্ণ ব্যাখ্যা সহকারে বর্ণিত হয়েছে। তা হচ্ছে-- ‘‘আমাদের আকীদা হলো : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো ‘ইলাহ' নেই। মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল)। এটি হচ্ছে সেই আকীদা বিশ্বাস যা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক খোদ আল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন এবং মহানবী (সাঃ) নিজ উম্মতের প্রতিটি ব্যক্তিকে এর শিক্ষা-প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। মওলানা মওদূদী (রহ.) তার নিকট আকীদা বিশ্বাসের ব্যাপারে সে কথাই জানিয়েছেন যে কথার ওপর গোটা মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা যেতে পারে। এটা কারও পক্ষেই অস্বীকারের উপায় নেই যে, মুসলিম জাতির মৌলিক আকীদা বিশ্বাস হচ্ছে একমাত্র লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)। যার ভিত্তিতে গোটা মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা যেতে পারে। এর সেই ব্যাখ্যাই সঠিক ও নির্ভরযোগ্য যা পবিত্র কুরআনে বিদফোন : ০১৭১৫৮১৯টি উপেক্ষা করে মনগড়া ব্যাখ্যা দিতে গেলেই ইখতেলাফ ও মতবিরোধী দেখা দেয়। কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক আকীদা-বিশ্বাসের বিস্তারিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দানের সঙ্গে সঙ্গে মাওলানা মওদূদী (রহ.) জামায়াতে ইসলামীর প্রকৃত লক্ষ্য উদ্দেশ্য কি তাও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি দ্ব্যর্থহীন শব্দে বর্ণনা করেছেন যে, আমাদের উদ্দেশ্য লক্ষ্য হচ্ছে একমাত্র বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। আমাদের সকল কর্মপ্রচেষ্টা এ জন্যেই নিবেদিত যেন আল্লাহ আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন এবং আখেরাতে মুক্তি ও সফলতা আমাদের ভাগ্যে জুটে। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতে মুক্তি লাভের জন্যে সেই কর্মপদ্ধতিই সকলের গ্রহণ করা কর্তব্য, মহানবী (সা.) যেই কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করেছিলেন। জামায়াতে ইসলামী সেই কর্মপদ্ধতি এভাবে স্পষ্ট ভাষায় চিহ্নিত করেছে যে, মানুষকে একমাত্র আল্লাহর দিকেই দাওযাত দিবে, শুধু তাঁর দিকেই সকলকে আহবান জানাবে। মাওলানা মওদূদী (রহ.) এবং জামায়াতে ইসলামী কিংবা অপর কোনো দল, দলনেতা অথবা কোনো ব্যক্তিত্বের দিকে কখনও জানাবে না। পবিত্র কুরআনও এই কর্মপদ্ধতিকে সঠিক আখ্যায়িত করে স্বল্পশব্দে বলে দিয়েছে,-
কুল্ হাযিহী সাবীলী, উদঊ ইলাল্লাহে আলা বাসীরাতি আনা ও মানিত্তাবাআনী (অর্থাৎ হে নবী; আপনি জানিয়ে দিন যে, আমার পথ তো এটাই যে, আমি আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াত দেই। আমি এবং আমার অনুসরণকারীরা পূর্ণ আলোতে নিজ রাস্তা দেখতে পাচ্ছে। (সূরা ইউসুফ : আয়াত ১০৮)
আমরা মৌলিকভাবেই আল্লাহর প্রতি মানুষকে দাওয়াত দেয়ার লক্ষ্যেই এই জামায়াত গঠন করেছি। শুধু একটি জামায়াত বা দল গঠনই উদ্দেশ্য নয় বরং এটি আল্লাহর প্রতি মানুষকে ডাকার আসল উদ্দেশ্যের একটি মাধ্যম মাত্র।
এ নিয়ে ওলামা-এ-কেরামের মধ্যে বহু বাহাস-গবেষণা হয়েছে যে, আল্লাহর প্রতি মানুষকে দাওযাত দানের জন্যে কোনো জামায়াত বা দল গঠন বৈধ অথবা উম্মতের প্রতিটি মানুষ ব্যক্তিগতভাবে এ কাজ সম্পাদন করবে? অবশেষে তারা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, কোনো একটি দল সংগঠিত করা ছাড়া এ মহান লক্ষ্যের দাওয়াতী কাজ কার্যকর হবে না। সুতরাং এ জন্যে একটি দল সংগঠন কারা অত্যাবশ্যক। তবে সঙ্গে সঙ্গে একথাও স্পষ্ট ভাষায় বলে দেয়া হয় যে, আল্লাহর প্রতি মানুষকে দাওয়াত দানের লক্ষ্যে গঠিত কোনো জামায়াত বা দল এ দাবি করতে পারবে না যে, তাতে যেসব লোক শামিল না হবে, তারা গোমরাহ বা পথহারা। কেননা, কোনো সংগঠিত দল বা জামায়াতের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি মানুষকে দাওয়াত দেয়াটা, মহানবী (সা.) এরই পদ্ধতি। সুতরাং এই পদ্ধতিতে জাতিকে সংশোধন ও পরিশুদ্ধ করার জন্যে আমরা জামায়াত আকারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যাদের সুযোগ হয় এবং এ পদ্ধতি যারা পছন্দ করে, তারা আমাদের সঙ্গে মিশে কাজ করতে পারেন। যারা আমাদের সাথে মিলে কাজ করতে অনিচ্ছুক তাদের কর্তব্য হলো, এ মহান কাজ সম্পাদনকল্পে, তারা সম্মিলিতভাবে সংগঠিত হোন। নবী মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া অপর কেউ এই দাবি করতে পারবে না যে, যারা আমার অনুসরণ না করে, তারা গোমরাহ পথভ্রষ্ট। একমাত্র আল্লাহর কোনো নবীই একথা বলতে পারেন। শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর পর আর কোনো নবী আসবেন না। তিনিই খাতামুন্নাবীঈন। অপর কোনো জাতিও এ দাবি করতে পারবে না যে, তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে অস্বীকারকারীরা পথভ্রষ্ট-গোমরাহ। মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.) নতুন কোনো ধর্ম প্রবর্তন করেননি। তেমনি এটা কোনো নতুন দল বা ফেরকাও নয়। এ জামায়াত কখনও মানুষকে একথাও বলেনি যে, আমাদের সঙ্গে যারা না আসবে, তারা গোমরাহ ভ্রান্ত।
জামায়াতে ইসলামী কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা আদর্শমাফিক যেই আকীদা-বিশ্বাস, উদ্দেশ্য-লক্ষ্য কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করেছে, এগুলোর ভিত্তিতেই দলটি মানুষকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়। যারা এ দাওয়াত গ্রহণ করে মহানবী (সা.)-এর অনুসৃত নীতি অনুসারে জামায়াত তাদেরকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কর্মপদ্ধতিগত প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এভাবে তাদেরকে আত্মশুদ্ধি, আল্লাহপ্রীতির প্রশিক্ষণ দিয়ে জামায়াত তাদের অন্তর থেকে নেফাক তথা দ্বিমুখী নীতি, কর্ম বৈপরীত্ব ও চিন্তার বৈষম্য দূর করে। তাদের মধ্যে ইসলামের কাক্মিখত মানবের গুণাবলী সৃষ্টির চেষ্টা করে।
এ পদ্ধতিতে তাদের চিন্তা, মনন ও চরিত্র গঠনের কাজ সমাপ্তির পর তাদেরকে এমন এক সুসংগঠিত ও দলভুক্ত করে, যে দলটি উল্লেখিত মানদন্ডে সমাজ সংস্কার ও সংশোধনে তৎপর হয়ে ওঠে। এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সুসংগঠিত দলটির মাধ্যমেই ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এবং চেষ্টা সাধনা অব্যাহত রেখে আসছে।
উদ্দেশ্য, যাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব কর্তৃত্ব কোনো অসৎ নেতৃত্বের হাতে না গিয়ে সৎ নেতৃত্বের হাতে যায়। কারণ অসৎ নেতৃত্বে শোষণ, জুলুম-নিপীড়নে মানুষ একদিকে যেমন বৈষয়িক শান্তি-সুখ, নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত হয়, অপরদিকে পরজীবনের মুক্তি ও কল্যাণের পথ থেকেও তারা বিচ্যুত হয়ে পড়ে। মহানবী (সা.) মদীনা কেন্দ্রিক একটি ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ঐ রাষ্ট্রকে তিনি সংশোধনও করেছেন। ক্ষমতায় সমাসীন অযোগ্য অসৎ নেতৃত্ব অপসারণ করে তিনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, সৎ, খোদাভীরু যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী ((রহ.) মুসলিম জাতির মধ্যে ঐক্য-সংহতি প্রতিষ্ঠায় সকল সময় সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর এই আহবানে সাড়া দিয়ে যারা তাঁর সঙ্গে এসে এ মহান কাজে শরীক হননি, তিনি তাদের ব্যাপারে কখনও একথা বলেননি যে, তারা ভ্রান্ত পথের অনুসারী। জাতিকে সুমহান লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে জামায়াত একটি আন্দোলন, যেই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন মাওলানা মওদূদী (রহ.)। জামায়াতে ইসলামী যদি কোনো একটি সম্প্রদায় হতো আজ আমরা কুরআন-সুন্নাহ ছেড়ে বিশেষ কোনো মতানুসারী হতাম, তাহলে জাতীয় ঐক্য-সংহতি বিধানে কোনোই অবদান রাখতে পারতাম না। এই খেদমতটি এ জন্যেই সম্পন্ন হবার যোগ্য যে, আমরা কুরআন ও সুন্নাহ ছাড়া কোনো মতবিশেষের সঙ্গে নিজেকে জড়িত করিনি।
এ সময় মুসলিম উম্মাহর সামনে যেই চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান তা হলো, আমেরিকা গোটা মুসলিম জাহানের বিরুদ্ধে এক অঘোষিত যুদ্ধ শুরু করেছে। সে বিশ্ব এবং বিশ্ববাসীর উপর নিজের ইচ্ছা আধিপত্য ও শোষণমূলক ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চায়। তার পাল্টা মুসলমানদের কাছে রয়েছে, আল্লাহ প্রদত্ত ইসলামী কল্যাণধর্মী জীবন ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া অপরিহার্য। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য মুসলিম উম্মাহর একনিষ্ঠ ও ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের মস্ত বড় দাবি। জামায়াতে ইসলামী এই ঐক্যেরই আহবায়ক। এ জন্যেই জামায়াত নিজেকে কোনো বিশেষ ধর্মীয় মত ও সম্প্রদায়ে পরিণত করেনি, যেন তারা জাতি থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ে বরং এই উম্মতের মধ্য থেকেই মুসলমানদেরকে তওহীদের একই প্লাটফরমে সমবেত করে মহানবীর কর্মপদ্ধতি মোতাবেক তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহবানের কাজে ভুক্ত করতে সচেষ্ট, যেন ভূপৃষ্ঠ পুনরায় নবুওত পদ্ধতির খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যেই খেলাফত তথা রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিল আল্লাহর নবীর জীবদ্দশায়, ছিল সাহাবা-এ-কেরামের শাসনকালের সোনালী যুগে।
ভাষান্তরিতকরণ : জুলফিকার আহমদ কিসমতী
Source: www.dailysangram.com

Thursday, July 20, 2017

জামায়াত লক্ষ্যপানে কতদূর অগ্রসর হয়েছে? অধ্যাপক গোলাম আজমের সাক্ষাৎকার


জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিসংখ্যা (১৯৯১সাল) সোনার বাংলা পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে আমীর জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আজমকে প্রশ্ন করা হয়: 
জামায়াত তার আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করেছে। পথহারা মুসলিম জাতিকে ইসলামের সুমহান লক্ষ্যপানে ধাবিত করাই জামায়াতে ইসলামীর বুনিয়াদি লক্ষ্য। খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শের আলোকে খেলাফত আলা মিনহাজিন্নাবুয়াত এই (নবীর তরীকা মোতাবেক খেলাফত) জামায়াত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জামায়াত সেই লক্ষ্যপানে কতদূর অগ্রসর হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

এর উত্তরে তিনি বলেন: আসল কথা হলো ইসলাম যে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এর দ্বারা রাজনীতি, অর্থনীতি তথা জীবনের সব সমস্যার সমাধান হতে পারে এ কনসেপ্ট মুসলিম সমাজ থেকে উবে গিয়েছিল।

বালাকোটের ময়দানে ইসলামী আন্দোলন ১৮৩১ সালে পরাজিত হবার পর সে আন্দোলন আর দানা বাধতে পারেনি। সাইয়েদ আহমদ শহীদের নেতৃত্বে সে আন্দোলন উপমহাদেশের উত্তর সীমান্ত প্রদেশ ও পাঞ্জাবের কিছু এলাকা নিয়ে একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করে। কিন্তু শিখ ও ইংরেজদের মিলিত ষড়যন্তের ফলে বালাকোটের ময়দানে পরাজয় ঘটে ইসলামের। এর ১০০ বছর পর প্রতিষ্ঠা লাভ করে জামায়াতে ইসলামী। এই পঞ্চাশ বছরে জামায়াতে ইসলামীর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে যে দলটির আন্দোলন ও সংগ্রামের ফলে ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান এই কনসেপ্টটি মুসলিম সামজে আবার প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। কয়েকশ বছর পর্যন্ত মুসলমানদের দিল-দেমাগ থেকে ইসলামের ধারণাই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু আলেম সমাজ ও মাদ্রাসাসমূহের ইহা এক বিরাট আবদান তারা কুরআন হাদীসকে সমাজের মাঝে জাগরূক রেখেছে। তাদের এ অবদান স্বীকার করতেই হবে।

কিন্তু কোরআন-হাদীরের জ্ঞান থাকার পরও আলেম সমাজ ইসলামকে একটি দ্বীন তথা জীবনাদর্শ হিসাবে তুলে ধরতে পারেনি। আমি বলব তাদের সামর্থ ছিল না। তাই তারা মুসলিমলীগ ও কংগ্রেস এ দুই ভাগে বিভক্ত ছিলেন। দেওবন্দী হবার পরও মাওলানা শাব্বির আহমদ ওসমানীর নেতৃত্বে ১০৪৩ সালে আলেমগন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম গঠন করেন যা পরবর্তীতে পাকিস্তান আন্দোলন সমর্থন দান করে।

মাওলানা মওদূদী এটা এক বিশেষ অবদান এমতো পরিস্থিতিতেও তিনি এমন এক আন্দোলন গড়ে তুলেন যা আজ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। ইউরোপ, আমেরিকা থেকে জাপান যেখানেই উপমহাদেশের মুসলমান রয়েছে সেখানেই এ আন্দোলন বিস্তার রয়েছে।

আজ আধুনিক শিক্ষিতদের মধ্যে একটি বড় দল তৈরী হয়ে গেছে যারা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে। অথচ আজ থেকে ৫০ বছর আগে এ অবস্থা ছিল না। এ আন্দোলন ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে লাখ লাখ নওজোয়ান নারী-পুরুষ-বৃদ্ধকে। মাদ্রাসার পাঠ চুকিয়ে যারা মনে করতেন দ্বীনের দায়িত্ব আঞ্জাম হয়ে গেছে বা যাবে এ আন্দোলন তাদের ধারনা পাল্টে দিয়েছে। ইকামাতের দ্বীনের কুরআনী জযবায় আলোড়িত করে তুলেছে ওলামা সমাজকে।

যে সমস্ত দলের তত্ত্বে ইসলাম নেই, তারাও আজ ইসলামের ঝান্ডা আর আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে নেমে এসেছে। নেজাম মানে বিধান নিয়ম নীতি রীতি। ১৯৫৩ সালে গঠিত হয় নেজামে ইসলাম। তাদের লক্ষ্য ইসলাম প্রতিষ্ঠা। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে খেলাফত আন্দোলন। ৪০ বছর পর্যন্ত রাজনীতিকে দ্বীনের অংশ মনে করতেন না হাফেজী হুজুর। তিনি ইসলাম কায়েমের জন্য ময়দানে নেমে আসেন জীবনের শেষ প্রান্তে। রাজনীতিকে বেছে নেনে পথ হিসাবে, যারা নাকি রাজনীতিকে দ্বীনের কাজই মনে করতেন না তাদেরকে এ আন্দোলনই শিখিয়েছে যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও দ্বীনের কাজ। আশির দশকে এ অঞ্চলে আরও একটি দল কায়েম হয়েছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে।

এভাবে আমি বলতে চাই-জামায়াতে ইসলামী এর লক্ষ্যে অনেক অগ্রসর হয়েছে এবং জামায়াতে এখন আল্লাহর রহমতে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে যে কেউ জামায়াতে করুক না নাই করুক এমনকি জামায়াতের বিরোধিতা করলেও কুরআনের আইনের কথা বলতে বাধ্য হচ্ছে।




Wednesday, February 22, 2017

খোলা চোখে বাংলাদেশের জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অবদান

লিখেছেন: সঠিক ইসলাম, মাধ্যমে: লোকমান বিন ইউসুফ date: June 18, 2014

খোলা চোখে বাংলাদেশের জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অবদান:

১.পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে দেশের একনিষ্ঠ লড়াকু কর্মী হিসেবে গড়ে তোলাঃ
১৭৫৭ সালে অধিপত্যবাদী ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ দখল করে নেয়ার সাথে সাথে প্রশাসনিক ও অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে ইংরেজী চালু করার কারনে আরবী, ফারসী, উর্দু ভাষা জানা হাজার হাজার আলেম (মাওলানা)প্রশাসনিক কাজের যোগ্যতা হারান ইংরেজী না জানার কারনে। তিনটি ভাষা পারা স্কলারগন হয়ে গেলেন অপাঙ্থেয়। তারা অহমিকা , আত্বসম্মানবোধ , দুরদৃষ্টির অভাবে ইংরেজী শিক্ষাকে হারাম বললেন। আর পিছিয়ে পড়লেন ৩০০ বছরের জন্য। তিনটি ভাষা রপ্ত করার মত যোগ্যতা সম্পন্নরা হয়ে গেলেন সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগন। জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে দেশের একনিষ্ঠ লড়াকু কর্মী হিসেবে পুনরায় গড়ে তোলে ব্রিটিশ পরাধীনতার গিনিপিগের দায় থেকে মুক্ত করেছে বাঙ্গালী জাতিকে।

২.ক্ষমতায় না গিয়ে কর্মসংস্থান তৈরী ও চুড়ান্ত সফলতা অর্জনঃ
বাংলাদেশে অন্যতম রাজনৈতিক দলগুলো ইতিমধ্যে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করেছে। বাংলাদেশের ডেভেলাপমেন্টের জন্য মৌলিক কি কাজ করেছে ? অথচ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এদেশে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গডে তুলেছে। স্কুল ,কলেজ,মাদরাসা , বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক, বীমা , হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান,এনজিও, মাইক্রোফিন্যান্স , মাল্টিপারপাস, ফার্মাসিউটিক্যালস, রিয়েলস্টেট কোম্পানী, শিপিং কোম্পানী, ট্রান্সপোর্টে বিনিয়োগ , টিভি চ্যানেল , সংবাদপত্র সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান তৈরী করেছে। যা বাংলাদেশের ডেভেলেপমেন্টে সুনাম ও সফলতার সাথে কাজ করছে। ইসলামী ব্যাংক আজ ব্যাংক জগতের শীর্ষে অবস্থান করছে।

৩. করাপশান ফ্রি (দুর্নীতি মুক্ত) পেশাদারী প্রতিষ্ঠান তৈরীঃ
জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ব্রেইন চাইল্ড ইসলামী ব্যাংক ১০০% করাপশান ফ্রি পেশাদারী প্রতিষ্ঠান। এখানে ইনভেস্টমেন্ট নীতে ঘুষ দিতে হয়না । কর্মকর্তা কর্মচারীরা ১০০% সৎ। বাংলাদেশে এমন করাপশান ফ্রি পেশাদারী প্রতিষ্ঠান কে তৈরী করতে পেরেছে। করাপশান ফ্রি পেশাদারী প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারনে এই মাসে টোটাল ফরেন রেমিটেন্সের ৩৮ % ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে। মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরা ইসলামী ব্যাংককে চরম বিশ্বাস করে ও ইসলামী ব্যাংক সফলতার সাথে সেই আস্থা ধরে রেখে দেশের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী ডেভেলেপমেন্ট ব্যাংক(আইডিবি) এর মত প্রতিষ্ঠান ও ইসলামী ব্যাংক এর সাথে বেশী কাজ করতে ইচ্ছুক যে ব্যাংকটি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের বলে আওয়ামীলীগ প্রায় চিৎকার করে উঠে।

৪. ইসলামী অর্থনীতি ও ইসলামী ব্যাংকিং জামায়াতে ইসলামীর ব্রেইন চাইল্ডঃ
ইসলামী ব্যাংকিং ও ইসলামী অর্থনীতি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ব্রেইন চাইল্ড। এই মডেল ওআইসিভূক্ত অনেক ইসলামী দেশে চলছে। সম্প্রতি নাইজেরিয়া সরকারী ভাবে আইডিবির পরামর্শে ইসলামী ব্যাংক থেকে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা হায়ার করেছে সে দেশে ইসলামী ব্যাংকিং চালু করার জন্য। সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী (রঃ) ও মাওলানা আবদুর রহীমের অনবদ্য গবেষনায় এটি সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশে ৭ টি র্পূনাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক রয়েছে যা জামায়াত নেতাদেরই চিন্তার সাফল্য। প্রপিট লস শেয়ারিং মেথড পুরোবিশ্বের অর্থনীতির জন্য ত্রানকর্তা বিবেচিত হবে অচিরেই।

৫.তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা দেয়াঃ
একটি মাইক্রো ক্রেডিটের আইডিয়া দিয়ে ও বাস্তবায়ন করে ডঃ ইউনুস সাহেব বাংলাদেশকে নোবেল প্রাইজ এনে দিয়েছে। ইউনুস সাহেবের যেমন হিলারীরা বন্ধু ঠিক তেমনি অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবেরও যদি পশ্চিমা বন্ধু থাকত তবে তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা দেয়ার জন্য শান্তিতে আরেকটি নোবেল বাংলাদেশ পেত। রাষ্টবিজ্ঞানে অনন্য সংযোজন তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের দুর্যোগপূর্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি দারুন কার্যকরী হয়েছে। তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলার আবেদন এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে তীব্রভাবে বিদ্যামান। পৃথিবীর সকল দুর্বল গনতন্ত্রী দেশে তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা আশার পথ দেখাবে অনেক দিন ধরে।

৬.আধিপত্যবাদ বিরোধী জনশক্তি তৈরীঃ
সরকার পরিবর্তন হলে আওয়ামীলীগের সোনার ছেলেদেরকে (ছাত্রলীগ/যুবলীগ) ক্ষমতায় থাকাকালীন করা অপকর্মের কারনে জনরোষের ভয়ে বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে দেখা যায়না । জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা পৃথিবীর ইতিহাসের স্মরকালের ভয়াবহতম নির্যাতন উপেক্ষা করে রাজনৈতিক ময়দানে তীব্রভাবে সক্রিয়। সকল আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অবদান রয়েছে। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ৯৬ তত্তাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন সহ আধিপত্যবাদী ভারত ও আমেরিকা বিরোধী আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ভূমিকা আছে। আধিপত্যবাদ বিরোধী নয় বিধায় আওয়ামীলীগকে দেশপ্রেমিক জনগন একদমই বিশ্বাস করেনা।

৭. আক্ষরিক স্বাধীনতার পরিবর্তে মানসিক স্বাধীনতার উপর গুরুত্বারোপ ও জন সেন্টিমেন্ট তৈরীঃ
জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে একটি অভিযোগ হচ্ছে তারা ১৯৭১ এ স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। এই অভিযোগের উত্তরে জামায়াতে ইসলামীর উত্তর হচ্ছে "তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের ভয়ে পাকিস্তান ভাগ হয়ে যাক চাননি" ।
আজকের বাস্তবতায় বাংলাদেশের জনগনকে যদি প্রশ্ন করা হয়
ক. ভারতীয় পন্য ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
খ. ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও সিনেমা ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
গ. ভারতের সাথে বানিজ্য ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ ?
ঘ.ভারতের সাথে সামরিক শক্তিতে পারবে বাংলাদেশ?
ঙ.বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক ও অবস্থান বাংলাদেশের সাথে ভারতের হবে কি?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে
বেশিরভাগ জনগনের উত্তর হবে না।
ক. ভারতীয় পন্য ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
খ. ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও সিনেমা ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
গ.ভারতের সাথে বানিজ্য ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ ?
এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর যদি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের কাছে আপনি খুজেন তারা বলবে অবশ্যই পারবে বাংলাদেশ । ভারতীয় পন্য ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ।
ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও সিনেমা ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ।
ভারতের সাথে বানিজ্য ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ । না পারলে প্রাচ্যমুখী বানিজ্যনীতি শুরু করতে হবে।
ঘ.ভারতের সাথে সামরিক শক্তিতে পারবে বাংলাদেশ?
ঙ.বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক ও অবস্থান বাংলাদেশের সাথে ভারতের হবে কি?
এই দুটি প্রশ্ন যদি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে করা হয় তারা উত্তরে বলবে আল্লাহর উপর ভরসা ও দেশপ্রেমিক জনতার সহযোগিতায় আমরা স্বাধীন স্বত্তা নিয়ে বেচে থাকতে চাই। আর এটা প্রমানিত সত্য যে এদেশের মানুষকে যুদ্ধ করে পরাস্ত করার ইতিহাস খুবই কম আছে।
মানসিক ভাবে যদি বন্দী থাকেন তবে কখনোই আপনি স্বাধীন হতে পারবেন না। আগে আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে "ইউ কেইন" আপনি পারবেন। তবেই আপনি পারবেন। জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কেহ বিশ্বাস করেনা এখন স্বাধীন পররাষ্টনীতির কথা । আক্ষরিক স্বাধীনতার পরিবর্তে মানসিক স্বাধীনতার উপর জামায়াতে ইসলামী গুরুত্বারোপ করেছে ও জন সেন্টিমেন্ট তৈরী করেছে।

৮.নৈতিক চরিত্র বিকাশ সাধনের জন্য প্রচুর পরিমান সাহিত্য তৈরী ও অনুবাদঃ
জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা নৈতিক চরিত্র বিকাশ সাধনের জন্য প্রচুর পরিমান সাহিত্য রচনা করেছে ও বিদেশী সাহিত্য অনুবাদ করেছে।

৯.কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও কবি ফররুখ এর পর প্রচুর পরিমান ইসলামী গান তৈরীঃ
আজ অসংখ্য নতুন ইসলামী গান আপনি শুনতে পান । কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে এর লেখক , সুরকার এবং প্রকাশক কারা? জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও কবি ফররুখ এর পর প্রচুর পরিমান ইসলামী গান দেশের জনগনের খেদমতে পেশ করেছে।

দেশগঠনঃ
১. সংগঠন ও দেশ পরিচালনায় একসাথে সকল জনশক্তির মগজ ব্যবহারের ব্যতিক্রম মডেল উপস্থাপনঃ আওয়ামীলীগ , বিএনপি ক্ষমতায় যায় । তাদের সকল স্তরের জনশক্তি কি দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়? অথবা দল পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা কি সকল জনশক্তির মগজ ব্যবহারে সক্ষম? কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির পরামর্শ ব্যবস্থা রেখে দল পরিচালনায় অনন্য সক্ষমতায় ও সফলতার সাথে প্রত্যকটি জনশক্তির ব্রেইনকে দল ও দেশের জন্য ব্যবহার করছে । একজন তৃনমুল পর্যায়ের কর্মী দলের ও দেশের জন্য কি চিন্তা করছেন ম্যাক্সিমাম এক মাসের মধ্যে দলীয় প্রধানের নিকট রিপোর্ট আকারে মুলবক্তব্যটি পৌছে যায়। এছাড়া কোন সমর্থক কর্মী ইচ্ছা করলে লিখিত বা ফোন করে পরামর্শ যেকোন স্তরের নেতাকে পৌছাতে পারে। দেশ পরিচালনায় এমন সিস্টেম চালু করা গেলে দেশের চেহারা অসম্ভব দ্রুত গতিতে পাল্টাবে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

২.প্রচুর পরিমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা , আদর্শ ও দক্ষ শিক্ষক সমাজ তৈরীঃ
পৃথিবীকে গড়তে হলে সবার আগে নিজেকে গড়। এই মূল মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে মেধাভিত্তিক দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য জামায়াত ১০০% শিক্ষিত নেতাকর্মী তৈরী করেছে। যার অধিকাংশ নেতাকর্মীরা উচ্চ শিক্ষিত। শুধু তাই নয় প্রচুর পরিমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা , আদর্শ ও দক্ষ শিক্ষক সমাজ তৈরী করেছে। যার সামান্য অবস্থান জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে অবস্থানের জানান দেয়।

৩. সমাজের নৈতিক মোটিভেশনের লক্ষ্যে বাকশক্তি সম্পন্ন অসংখ্য সাহসী ইমাম তৈরী করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির।

৪. লেখক ও সংস্কৃতি কর্মী তৈরী করেছে। রমজানের সময় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ইসলামী অনুষ্ঠান ও টকশো তার প্রমান বহন করে।

৫.জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এদেশে দেশপ্রেমিক প্রশাসনিক অফিসার তৈরী করেছে । যারা প্রশাসনের ভিতরে সৎ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে পরিচিত। সাবেক এক স্বরাষ্ট সচিব ও ফেনীর সাবেক এক ডিসির কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা।

৬. জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা এদেশে অসংখ্য হাসপাতাল,ক্লিনিক, দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে।

৭. সর্বপর্যায়ের জনশক্তিকে কার্যকরভাবে অধ্যয়নমুখী করা , ক্যরিয়ার সচেতনতা তৈরী , নিজ দরীয় নেতাকর্মীদের উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাতে পারা ও দেশ গঠনের কাজে লাগিয়ে দেয়া জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এর অন্যতম অবদান। এক রেটিনা (মেডিকেল ভর্তি কোচিং) দিয়েই তো প্রচুর মেধা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের তৈরী করে সরকারী মেডিকেলে সাপ্লাই দিয়েছে ছাত্রশিবির । খ্রিষ্টান মিশনারী শিক্ষাপ্রতিষ্টানের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিদের অবদান সুবিধাভোগীরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরন করবে।

দলীয় ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনে ভূমিকাঃ
১ .জামায়াতে ইসলামী , ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা বাংলাদেশে দলীয় কোন্দল মুক্ত সহনশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে । বাংলাদেশে বিদ্যামান অন্য দলগুলোতে খুনোখুনি পর্যায়ের দলীয় কোন্দল।

২.জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির তাদের দলীয় পরিবেশে অনুকরনীয় গনতন্ত্র চর্চা করে । বিএনপি ও আওয়ামীলীগে যা নেই।

৩. ১০০% ধুমপানমুক্ত সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির। যা বাংলাদেশের অন্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলো কল্পনা করতে পারেন।

৪. তৃনমূল পর্যায় থেকে নেতা তৈরী ও বাছাই করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে দায়িত্বপালনের সুযোগ প্রদান জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির । অন্য দলের নেতা কমীরা তা স্বপ্নে ভাবেন মাত্র।

৫. দলের নেতাদের প্রতি কর্মীদের আস্থা রয়েছে অগাধ। এই দলটি সৎ জনশক্তি তৈরী করতে পেরেছে ও সৎ জনশক্তিগন জনগনের আস্থা অর্জন করেছে। যার কারনে গত ব্যাংকিং বছরে ইসলামী ব্যাংক ৩২ % ফরেন রেমিটেন্স সংগ্রহ করতে পেরেছে। আর কে না জানে এই ব্যাংকে জামায়াতে ইসলামী , ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা আছেন।
বাংলাদেশে যদি আওয়ামীলীগের তৃনমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আপনি প্রশ্ন করেন তাদের নেতারা কেমন? উত্তরে তারা বলবে "সব ধান্ধাবাজ , চোর ও পেট লীগ" । আর জামায়াতে ইসলামীর সকল সমর্থককে আপনি প্রশ্ন করে দেখেন যে "সাঈদী হুজুর কেমন?" উত্তরে তারা সবাই বলবে উনি খুবই ভাল লোক। কাছের মানুষের সাক্ষ্যই মানুষের ভাল হওয়ার প্রমান বহন করে। তাই নয় কি?

৬.জামায়াতে ইসলামী , ছাত্রশিবির কর্মীদের চাদাঁয় দল পরিচালনা করেন। এমন ত্যাগী মন মানসিকতার নেতাকর্মী তৈরী অন্যরা শুধু স্বপ্নে দেখে চমকে উঠবেন মাত্র।
Source: www.onbangladesh.org

Thursday, January 12, 2017

সরকারী ক্ষমতায় সীমিত সামর্থ নিয়ে জামায়াতের সাফল্য



> বিগত পাঁচ বছর চারদলীয় জোট সরকারে অংশগ্রহণ করে জামায়াতের দুইজন মন্ত্রী দেশবাসীর সামনে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, সকল প্রকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অন্যায়-অবিচার হতে সম্পূর্ণ মুক্ত থেকে দক্ষ ও যোগ্যতার সাথে সরকার পরিচালনা করা সম্ভব। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে জামায়াতের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাদের মন্ত্রণালয়ে কোন দুর্নীতির প্রমাণ না পাওয়া তার বড় প্রমাণ।


> জামায়াতের এমপিগণ জাতীয় সংসদে ভূমিকা পালনের সাথে সাথে নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করে জনগণের মধ্যে এক নবজাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।


> জামায়াতের আমীর কৃষি মন্ত্রী থাকাকালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সচিবালয় থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত কৃষি সেক্টরে ব্যাপক গতি সঞ্চার করা হয়।

> রফতানিযোগ্য কৃষি পণ্যের উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়।

> দারিদ্র্য বিমোচন ও কৃষকের ক্ষমতায়নের জন্য “চাষীর বাড়ি-বাগান বাড়ি” প্রকল্প চালু করা হয়।
> সহজে পণ্য বিক্রয়ের জন্য কমিউনিটি মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা হয়।

> বৃক্ষরোপন অভিযানের সাথে ফলজ গাছের রোপণ অন্তর্ভুক্ত করে ফল চাষের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করা হয়। দেশীয় ফলের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুন হয়।
> প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সকল গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চলতি দায়িত্বের স্থলে পূর্ণকালীন মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয়।
> মাঠ পর্যায়ের প্রায় ১২০০০ ব্লক সুপারভাইজারদের পদ আপগ্রেড করে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পদে পদায়ন করা হয়- যুগান্তকারী এ পদক্ষেপের ফলে কৃষি উন্নয়নে তাদের আগ্রহ ও নিষ্ঠা বৃদ্ধি পায়।

> দেশে দ্রুত শিল্পায়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, দেশব্যাপী ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) শিল্পের ব্যাপক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিল্প নীতি-২০০৫ এবং এসএমই উন্নয়ননীতি কৌশল-২০০৫ প্রণয়ন করা হয়।

> দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা আরো বেগবান করার জন্য স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ (এসএমই) ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়।
> বিএসটিআই’র আধুনিকায়ন, ন্যাশনাল এ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড গঠন, পেটেন্ট অফিস এবং ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রি অফিসকে একীভূত করে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর গঠন, বিএসটিআই’র আধুনিকায়ন করা হয়।

> বন্ধ শিল্প যেমন কর্ণফুলী পেপার মিলস লিঃ (কেপিএম)-এর কস্টিক ক্লোরিন প্লান্ট ও খুলনা হার্ডবোর্ড মিল পুনঃচালু করা হয়।

> ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে মহিলাদের কর্মসংস্থান ও সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে শিল্পোদ্যোক্তা ফোরাম গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

> সফল সার ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের উন্নয়ন, মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের আধুনিকায়ন করা হয়।

> লবন উৎপাদন দ্বিগুন হয়। চিনি শিল্পে প্রথম দু’বছরের প্রচেষ্টায় ১২ বছর ধরে চলা লোকসান বন্ধ হয় এবং ৩য় বছরের শেষে লাভজনক শিল্পে পরিণত হয়।
> এ সময়ে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধির হার অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।

> এছাড়াও কৃষি ও শিল্প সেক্টরে অনেক উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়, ফলে দেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জিত হয়।

> জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী থাকাকালে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে ঋণ, অনুদান, আয়বর্ধক, প্রশিক্ষণ, ইত্যাদি কর্মসূচী গ্রহণ ও সম্প্রসারণ করা হয়।
> উপরোক্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য বাজেট প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি করা হয় ।

> বয়স্ক ভাতাভোগীদের সংখ্যা ৪ লক্ষ থেকে বৃদ্ধি করে ১৭ লক্ষে উন্নীত করা এবং ভাতা বৃদ্ধিসহ বাজেট প্রায় ৮ গুণ বৃদ্ধি করা হয়।

> গরীব-দুস্থ-অসহায় ব্যক্তিদের জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হার্ট ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারণ করা হয়।

> প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ও কল্যাণে ৮ দফা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়।

> প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ভাতা ও বিনাসুদে ঋণ প্রদান এবং প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য ছাত্রবৃত্তি প্রদানের স্থায়ী নিয়ম চালু করা হয়।

> প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আয়বর্ধক কমসূচী যেমন, মিনারেল ওয়াটার উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও বিপণন ব্যবস্থা চালু করা এবং প্লাষ্টিক দ্রব্যের উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হয়।

রচনাকাল: ৫ মার্চ ২০১২, সোমবার

Popular Posts